জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল পৌরসভার মেয়র এর বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়ায় কিশোর নির্যাতনের প্রচারনা। বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহব্বান মেয়রের।
জানা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে পৌর এলাকার হেরাকুলা (নওয়ানা) গ্রামে চিশ্তীয়া তরিকার দরবার শরীফে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। একই এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রাম থেকে হেরাকুলা নওয়ানা গ্রামে আত্মীয়ের বাড়ীতে বেড়াতে আসা রাবেয়া খাতুন নামে একটি কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করছিল পার্শ্ববর্তী ধনকুড়াইল গ্রামের খলিলুর রহমান কাজীর কিশোর ছেলে সুজন কাজী (১৬)। এ সময় মেয়েটির চিৎকার শুনে অনুষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবক’রা এগিয়ে আসে। অনুষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবক ও আগত ভক্তরা চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এসে শাসনমূলকভাবে দু’একটি চড় থাপ্পড় মারে। অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত পৌর মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলু ওই সময় অনুষ্ঠানে আসার পথে ঘটনাটি দেখে উপস্থিত লোকজনকে সরিয়ে দিয়ে বিষয়টি মিমাংশা করেন এবং সুজনকে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন। পরে কিশোর সুজন ক্ষেতলাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে নিজেকে মেয়র কর্তৃক নির্যাতিত বলে দাবি করেন এবং মিমাংশিত বিষয়টিকে নিয়ে পরের দিন থেকে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে কিশোর নির্যাতনের অভিযোগ এনে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের প্রচার চালাতে থাকে। এদিকে এ ধরনের প্রচারনায় ক্ষেতলালে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক মিথস্ক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং পৌর মেয়রের বিপক্ষে একটি মহল সমালোচনায় লিপ্ত হন। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা গতকাল সরোজমিন অনুসন্ধান করেন, উত্ত্যক্তের শিকার কিশোরী এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেন। এ সময় উত্ত্যক্তের শিকার রাবেয়া খাতুন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ছেলেটি আমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ঘটনার দিন সুজন কাজী নামক ওই ছেলেটি আমার ওড়না ধরে টানাটানি করে এবং নোংরা কথা বলে। আমার সাথে সে বাক বিতন্ডায় জড়ালে স্থানীয় লোকজন তা শুনে এগিয়ে এসে তাকে চর থাপ্পর মেরে শাসন করে। তারপর পৌর মেয়র এসে উপস্থিত লোকজনকে শান্ত করে সুজনকে বাড়ীতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পৌর মেয়রকে কোন শারীরিক নির্যাতন করতে দেখিনি।”
ঘটনার সময় উপস্তিত থাকা স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম ও জিয়াউর রহমান জানান. পৌর মেয়র তাকে কোন শারীরিক নির্যাতন করেননি। একটু দেরি হলেই ছেলেটি গণপিটুনির শিকার হতো। বরং সে ক্ষেত্রে পৌর মেয়র বিষয়টি মিমাংশা করে দিয়েছেন।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা কিশোর সুজনকে ০১৭৭.....১২১ নং মুঠোফোনে বারবার কল করলে সে ফোন কেটে দেয়। তবে তার বড় ভাই শাহীনুর ইসলাম বলেন, “আমার ভাই কোন মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেনি। আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্তে অভিযোগটি সম্পন্ন মিথ্যা এবং সাজানো। অপ্রাপ্ত বয়স্ক আমার ছোট ভাইকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মেয়র নিজ হাতে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। আমার ছোট ভাই এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।”
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ জোবায়ের আল ফয়সাল বলেন, “তার আঘাত গুরুত্বর কিছু নয়। তার শরীরে হালকা আঘাতের চিহ্ন আছে।”
ক্ষেতলাল পৌর মেয়র বলেন, “আমি কিশোর ছেলেটিকে নির্যাতন করিনি বরং মিমাংশা করে দিয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পরিবেশ শান্ত করেছি। মিমাংশিত বিষয়টিকে নিয়ে একটি মহল আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার চেষ্টা করছে। আমি জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি।”