রাজশাহীর তানোরে ১০ফিটের সরু সেই পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ন কালভাট রেখেই আবারো ১৬কোটি টাকা ব্যায়ে তানোর থেকে আমনুরা’র ধামধুম পুর্যন্ত সড়কটি সংষ্কার করা হচ্ছে ১৬ফিটের প্রসস্থ্য ১৮কিলোমিটার রাস্তা। কালভাট গুলো প্রসস্থ্য না করায় দূর্ঘটনার আশংখ্য করছেন যানবাহন চালকসহ যাত্রীরা।
বিভাগীয় শহর রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানার বায়া থেকে তানোর উপজেলার বুক চিরে রাস্তাটি চলে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা পর্যন্ত। তানোরের সবচেয়ে শুরুতুপূর্ন ও ব্যস্ততম সড়কটি নির্মাণের শুরুতে ১০ফিট প্রসস্ত করা হয়েছিলো। এরপরে আরো কয়েক দফা রাস্তাটি সম্প্রসারণের কাজ করা হয়েছে। শেষে এসে রাস্তাটির প্রসস্ত ঠেকেছে ১৬ ফিটে। তবে, শুরু থেকে মুন্ডমালা থেকে আমনুরা ধামধুম পর্যন্ত রাস্তাটি ১০ফিট প্রসস্থ্য ছিলো বর্তমানে সেটিও ১৬ফিট প্রসস্থ্য করে সংস্কার করা হচ্ছে।
তানোর থেকে আমনুরা ধামধুম পর্যন্ত ১৮টিলোমিটার সড়কটি নতুন করে আবারও সম্প্রসারণসহ সংস্কার করা শুরু হয়েছে। তবে, তানোর থেকে মুন্ডমালা পর্যন্ত সরু কালভাট গুলো এবারো প্রসস্থ্য করা হচ্ছে না। ফলে, দূর্ঘটনা ঘটার আশংখ্য থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন যানবাহন চালকসহ যাত্রীরা।
বায়া থেকে আমনুরা পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার সড়কের ১৬ফিটের প্রসস্থ্য রাস্তায় ২০টি ব্রিজ ও কালভার্ট থেকে যাচ্ছে ১০ফিট প্রসস্থ্য। তবে, রাস্তা প্রসস্থ্য হলেও কালভার্টগুলো সরু থেকে যাওয়ায় ওইসব সরু কালভাটের স্থান গুলোতে দুর্ঘটনা বাড়ার আশংখ্যাও করছেন চালকরা। চালকসহ যাত্রীরা বলছেন, রাস্তা ভালো থাকলে গতি বাড়ীয়ে যানবাহন চালান চালকরা। ভাঙ্গা রাস্তাতেই গাড়ির গতি কমিয়ে যানবাহন চালাতে গিয়েও ব্রিজ ও কালভাটের স্থানেই প্রায় ও বেশী দূর্ঘটনার স্বীকার হন চালকরা। রাস্তা প্রসস্থ্য করে সংস্কার করে নতুন ও ভালো রাস্তায় গাড়ীর গতিও বেশী থাকে এখানেও ঠিক তেমনটি ঘটনার আশংখ্যা করছেন চালকসহ যাত্রীরা।
এলাকাবাসীসহ চালকরা বলছেন, এসব ব্রিজ ও কালভার্ট পারাপার হতে গিয়ে মালবাহী ট্রাকসহ ছোট-বড় যানবহন প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনায় পড়ছে। বিশেষ করে রাতে প্রসস্থ্য রাস্তার মাপে গাড়ি চালাতে গিয়ে সরু কালভার্টে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি। বর্তমানে রাস্তা ভালো ও প্রসস্থ্য করা হলেও ব্রিজ-কালভাটগুলো প্রসস্থ্য না করায় দুর্ঘটনা আরো বাড়বে বলেও মনে করছেন চালকসহ যাত্রীরা।
তানোর ফায়ার সাভির্সের তথ্য অনুযায়ী, গত ২২ বছরে রাজশাহী-তানোর-আমনুরা রাস্তায় ১২০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণহানী হয়েছে ১৫জনের। আহতের হয়েছেন দুই শতাধিক। সর্বশেষ ২০১৭ বছর জানুয়ারি মাসেই তানোর-আমনুরা রোডের দেবিপুর মোড় এলাকায় সরু কালভাটের কাছে নির্মানধীন হিমাগারের মালামাল রাখায় চলন্ত ট্রাকের নিচে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে তানোর উপজেলা কর্মরত সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাকসুদা খাতুন মারা যান। এমন মৃত্যুতে উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছিলো।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তানোর অফিসের তথ্য মতে, ১৯৯২ সালে বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)’র পক্ষ থেকে আমনুরার ধামধুম থেকে-তানোর হয়ে রাজশাহীর বায়া পর্যন্ত প্রায় ৪৩কিলোমিটার ১০ফিট প্রসস্থ্য পাঁকা এই রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে বিএমডিএ রাস্তাটির রক্ষনা বেক্ষনের দায়িত্ব পালন করছিল।
২০১২সালে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ (এলজিইডি) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে এই ৪৩কিলোমিটার রাস্তাাটি হস্তান্তর করেন। সে থেকে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ রাস্তাটির রক্ষনা বেক্ষনের দায়িত্বপান করছে। তবে, ৬বছর পর ২০১৮ মালে ওই সড়কের গাছগুলো টেন্ডার দিয়ে কেটে নিয়েছে (বিএমডিএ) কর্তৃপক্ষ। এলজিইডি পর্যায়ক্রমে মুন্ডমালা থেকে বায়ার বাগধানি পর্যন্ত রাস্তাটির সম্প্রাসারণ করে ১৬ফিট করলেও মুন্ডমালা থেকে আমনুরা ধামধুম পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা বর্তমানে সম্প্রসারণ করে ১৬ফিট প্রসস্থ্য করা হচ্ছে। কিন্তু কালভাটগুলো প্রসস্থ্য করন করা হচ্ছেনা।
এবিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) তানোর উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন কালভার্ট-ব্রিজ গুলো অতিঝুঁকিপুর্ণ স্বীকার করে বলেন, কালভার্টগুলো নতুন করে সম্প্রাসারণ করতে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর (এলজিইডি) কাছে খুব দ্রুত প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।