সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার স্ত্রীর চাপে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতেছেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক থাকাকালীন সময়ে আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল খিজির হায়াত খান। সে সময় বসুরহাটের ব্যবসায়ী আক্তার মিয়ার হোন্ডা করে আমাদের নেতা মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের ওবায়দুল কাদেরকে মাইজদী নিয়ে গিয়েছিল। যার কারণে তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য আজকে আমার ওপর ও আমার নেতাকর্মীদের ওপর মন্ত্রীর সহ-ধর্মিনী ইসরাতুন্নেছা কাদেরের নির্দেশে ব্যাপক তান্ডব চালাচ্ছে পুলিশ। ডিবি পুলিশ, কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ আমার ২০জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। যারা আমার সংস্পর্শে এসেছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীরের নির্দেশে নোয়াখালীর ডিবি পুলিশ, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ও ওসি (তদন্ত) এর নেতৃত্বে আমার নিরীহ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেফতার করছে। অথচ যারা আমার রূপালী চত্বরের ৩য় তলায় আলেয়া টাওয়ার আমার ব্যক্তিগত অফিসে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, ওবায়দুল কাদেরে ছবি ভাংচুর ও লুটপাট করে এবং বঙ্গবন্ধু শতবর্ষ বার্ষিকী উদযাপন মঞ্চ ভাংচুরের মামলায় তাদেরকে গ্রেফাতার করতেছে না। সেদিন রাতে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার পৌর কার্যালয়ে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ ও ককটেল বিষ্ফোণের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার করছে না।
তিনি মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পৌরসভা কার্যালয়ে নিজ ফেইসবুক আইডিতে লাইভে এসে এসব কথা বলেন।
মির্জা আরও বলেন, আমার পৌরসভায় শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী চরম আতঙ্কে রয়েছে। অপরদিকে পৌরবাসীর মধ্যে যারা সরকারী রাজস্ব পৌরসভায় জমা দিবেন তারা বিভিন্ন আতঙ্কে পৌর ট্রেক্স দিতে আসতে পারছেন না। এতে সরকারী পৌরসভা ও সরকারের রাজস্ব আদায়ের চরম বেঘাত ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, কাদের সাহেব আপনি বড় নেতা, আল্লাহ আপনাকে আরও বড় করুক। আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে আর আপনি বসে বসে তামাশা দেখছেন। তিনি আরও বলেন, আমার হয়ত জীবন অবসান হবে, আমাকে হয়ত কারাগারে পাঠাবে। এসকল অপকর্মের হোতা ইশরাতুন্নেছা কাদের। তার নেতৃত্বে সব কিছু হচ্ছে। অস্ত্রধারীদের নিয়ন্ত্রণ করে নুরুল করিম জুয়েল, ইস্কান্দার মির্জা শামীম, উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন, ঢাকার ব্যবসায়ী নাজমুল হক নাজিম। আর প্রশাসন নিয়ন্ত্রন করে, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর।
কাদের মির্জা বলেন, খিজির হায়াত খান ও সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী জাসদের গণবাহিনীর নেতা ছিলেন। এরা আমাদের আ.লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা কামালকে গুলি করে হত্যা করেছে, মাষ্টার নুরনবী, মুক্তিযোদ্ধা জামাল ও আমার মামা এমদাদুল হককে গুলি করেছে এবং কবিরহাটে ব্যাংক ডাকাতি করেছে। এরা একসময় আমার কাছে স্বীকারও করেছেন। সে খিজির হায়াত ও নুরনবী চৌধুরীকে ওবায়দুল কাদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারী বানিয়েছেন।
ওদিকে মঙ্গলবার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুছ স্বাক্ষরিত প্রেস রিলিজ এ অভিযোগ করে বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশিরহাট বাজারে একরামুল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে এবং টেকের বাজারে নিজাম হাজারীর নেৃতত্বে আমাদের উপর আবার হামলা হয়। ওই হামলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির নিহত হন। নিকৃষ্টতম এই হত্যাকে অন্যদিকে প্রভাবিত করে আমার দলের নিরীহ কর্মী এবং সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবী করেন। আমাদের নেতা মেয়র আবদুল কাদের মির্জা সাহস করে সত্য কথা বলায় স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থে আঘাত লেখেছে। পৌর এলাকার ব্যবসায়ী ও নাগরিকদে ওপর পুলিশের নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় হয়রানিমূলক গ্রেফতার করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
অপরদিকে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার কর্মসূচীতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন নোয়াখালী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়। ১৫ মার্চ নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর আগে মেয়র র্যালি, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন,আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালন করার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ে আবেদন করেছিলেন। অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল আলম চিঠিতে বলেন, এসব অনুষ্ঠানে প্রচুর লোক সমাগম হবে। বিবদমান দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারে।তাই এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। শুধু মাত্র ইনডোরে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এ অনুষ্ঠান পালন করা যাবে।চিঠির কপি পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কার্যালয়ে পৌছে দেওয়া হয়েছে। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি।