পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস জাতীয় পর্যায়ে গৃহীত কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে যথাযথ মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের সাথে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোঃ নূরুল আলম নিজামী’র সভাপতিত্বে বর্ণাঢ্য কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি।
কর্মসূচীর মধ্যে সকাল ৯ টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কার্যালয়স্থ রাঙ্গামাটিতে বোর্ড ও বোর্ডের আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারী, পাড়াকেন্দ্রের কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্য অংশগ্রহণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে ১০০ বেলুন উড্ডয়ন এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে বোর্ডের প্রধান কার্যালয় হতে দোয়েল চত্বর প্রদক্ষিণ করে বোর্ডের প্রধান কার্যালয় পর্যন্ত র্যালি আয়োজন করা হয়। র্যালি শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন স্বরূপ বঙ্গবন্ধুর মুর্যালে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়।
সকাল ১০ টায় বোর্ডের অডিটরিয়াম মাইনী হলে তথ্য কর্মকর্তা মিজ্ ডজী ত্রিপুরা’র উপস্থাপনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একজন মহা রাষ্ট্রনায়ক যিনি তার জীবনের চেয়ে অনেক বড় কিছু অনন্যা মহিমা তৈরী করে গেছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর একটা অংশ। সেজন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের তাঁর পদচারণের স্মৃতিস্বরূপ চরণরেখা তব বঙ্গবন্ধু ও পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রকাশ করা হয়েছে। বেতবুনিয়ার ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রে ১০০ফুট দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু’র মুর্যাল স্থাপন করা হয়েছে, যা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনা’র শুভ উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল আলম নিজামী বলেন, বঙ্গবন্ধু একজন অবিসংবাদিত নেতা। তিনি শুধু বাংলাদেশের নন বরং বিশে^র অন্যান্য রাষ্ট্রের কাছে অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে পরিণত হয়েছে। এটি একদিনে তৈরী হয়নি। তিনি শিশুদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নই ছিলো একটি সুখী সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়া; এবং শিশুদেরকে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার যোগ্য কারিগর হিসেবে মনে করতেন।
বোর্ডের সদস্য পরিকল্পনা ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকে যারা শিশু, কাল তারা বিশে^র নেতৃত্ব দেবে। তাই শিশুদেরকে প্রতিটি ক্ষেত্রে যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে এবং কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে। তবে বঙ্গবন্ধু’র শিশুদের নিয়ে যে ভাবনা সেটা বাস্তবায়িত হবে।
সদস্য বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এমন একজন মানুষ, যাকে ছাড়া বাংলাদেশ কল্পনা করা যায় না এবং আমরা যার জন্ম না হলে এদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশে^র দরবারে উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ পেতাম না।
এ ছাড়া বোর্ডের মিশ্র ফল চাষ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব মোঃ সফিকুল ইসলাম, টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব এয়াছিনুল হক, সাবেক প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব মোঃ জানে আলম, চেয়ারম্যান মহোদয়ের একান্ত সচিব জনাব মংছেনলাইন রাখাইন, জনাব কাইংওয়াই ম্রো গবেষণা কর্মকর্তা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর সংক্ষিপ্ত রক্তব্য রাখেন। শিশু কিশোরীদের পক্ষে অনুভূতি প্রকাশ করেন ইতু তঞ্চগ্যা।
এছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ/মন্দির/প্যাগোডা/গীর্জায় বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। আলোচনা শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে ৫০ পাউন্ডের একটি কেক কাটা করা হয়।
আলোচনার শেষে বোর্ডের আয়োজনে কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্য ও পাড়াকেন্দ্রের শিশুদের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের ব্যবস্থাপনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত বর্ণ লিখন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী যারা ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার করেছে তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেয়া হয়। আজ সন্ধ্যা ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রাঙ্গণে ফানুস উড্ডয়ন এবং আতশবাজি উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
বর্ণাঢ্য কর্মসূচিতে সদস্য পরিকল্পনা সরকারের উপসচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, সদস্য বাস্তবায়ন সরকারের উপসচিব মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, সাবেক প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ জানে আলম, মিশ্র ফল চাষ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম, টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক, এয়াছিনুল হক, চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মংছেনলাইন রাখাইন, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা কল্যানময় চাকমা, রাঙ্গামাটির জেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক মনজু মানস ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ মতিউর রহমান, কাইংওয়াই ম্রো গবেষণা কর্মকর্তা, বাজেট ও অডিট কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান, রাঙ্গামাটির চলতি দায়িত্বে নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা, চলতি দায়িত্ব সহকারী সচিব সাগর পাল, মিশ্র ফল চাষ প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান, রাঙ্গামাটির সহকারী প্রকৌশল (সিভিল) মোঃ খোরশেদ আলম, রাঙ্গামাটির সহকারী প্রকৌশল (সিভিল) মিজ্ ত্রয়া সরকার, সহকারী পরিকল্পনা কর্মকর্তা মনতোষ চাকমা, বাঁশ প্রকল্পের ফিল্ড ম্যানেজার বিধান চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও বোর্ডের আওতায় সর্বস্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।