কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ছেলের বদলী হিসেবে নিকাহ রেজিষ্ট্রারের কাজ করছেন আইন মন্ত্রণালয় থেকে রেজিষ্ট্রেশন পাওয়া এক নিকাহ রেজিষ্ট্রারের বাবা। তথ্য গোপন করে এ কাজ করায় ওই নিকাহ রেজিষ্ট্রারের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিস্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন আর একজন।
অভিযোগকারী পৌরসভার বাগডাঙ্গা দধির গ্রামের মাঈন উদ্দিন সরদার তার লিখিত অভিযোগে জানান, গত ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল নিকাহ রেজিষ্ট্রার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পৌরসভার ১,২ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিষ্ট্রারের লাইসেন্স পান পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড বল্লভপুর গ্রামের আবদুল মোন্নাফের ছেলে আবুল হাসান। এরপর থেকে তিনি বরিশাল চরমোনাই আহছনা বাদ রশিদীয়া কামিল মাদ্রাসায় ২০১৬-১৭ সেশনে তিন বছরের ফাজিল (স্নাতক) ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকার অধীনে চুড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ন হন। যার ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে তিনি ওই মাদ্রাসায় কামিল প্রথম বর্ষে অধ্যায়নরত আছেন। এর পাশাপাশি তিনি বরিশাল সরকারী কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলা বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত। পড়ালেখার সুবাদে তিনি সেখানে অবস্থান করায় নিকাহ রেজিষ্ট্রারের আইন অমান্য করে বদলী হিসেবে তার বাবা আবদুল মোন্নাফ এলাকায় নিকাহ রেজিষ্ট্রারী করছেন। এতে নকল প্রাপ্তি ও রেজিষ্ট্রির ব্যাপারে মানুষ হয়রানি শিকার হচ্ছেন। সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও তার দ্বারা বাল্যবিবাহ সংঘটিত হচ্ছে। উপর্যুক্ত বিষয় উল্লেখ করে ওই নিকাহ রেজিষ্ট্রারের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ৮মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিস্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন মাঈন উদ্দিন সরদার।
এবিষয়ে মুঠোফোনে আবুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। একটি মহল তার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। করোনাকালীন গত এক বছর থেকে তিনি বাড়িতে আছেন এবং দায়িত্ব যথাযত পালন করছেন। পড়ালেখার বিষয়ে তিনি বলেন বরিশাল চরমোনাই আহছনা বাদ রশিদীয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাশ করার পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে কামিল প্রথম বর্ষে ভর্তি দেখিয়েছে কিনা তিনি জানেন না। তিনি নাগেশ্বরী কামিল মাদ্রাসায় নিজে কামিল প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন। তবে বরিশাল চরমোনাই আহছনা বাদ রশিদীয়া কামিল মাদ্রাসা হোক, আর নাগেশ্বরী কামিল মাদ্রাসা হোক, যেখানে আগে রেজিষ্ট্রেশন হবে সেখান থেকে তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। আর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বরিশাল সরকারি কলেজ থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে কাছাকাছি কোন কলেজে ভর্তি হয়ে বাংলায় অনার্স পড়বেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহমেদ মাছুম জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।