২০৩০ সালের মধ্যে সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়নে কৃষি বিভাগকে আরও সক্রিয় হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিভাগের সেবা কম বেশি হলে খুব বেশি সমস্যা নাই, তবে পর্যাপ্ত সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে না পারলে সমস্যা হবে। তিনি আরও বলেন, বইমুখী সমাজ গড়ে তোলার প্রচারণার জন্য পোস্টার, প্রচারপত্র এবং বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অনলাইভিত্তিক সামাজিক অবক্ষয় থেকে রক্ষার জন্যই আমাদেরকে বই এর প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য পরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে সদস্য প্রর্বতক চাকমা, সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, সদস্য বাদল চন্দ্র দে, সদস্য প্রিয়নন্দ চাকমা, সদস্য ঝর্ণা খীসা, সদস্য দিপ্তীময় তালুকদার, সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, সদস্য আসমা বেগম, সদস্য সবির কুমার চাকমা, সদস্য নিউচিং মারমা, সদস্য আবদুর রহিম, সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বরুন কুমার দত্ত, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃঞ্চ প্রসাদ মল্লিক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, সিআইডিপি বিসিক সহকারী মহাব্যবস্থাপক শামছু উদ্দিন মজুমদার, জেলা কার্যালয় বিসিক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ মুনতাসীর মামুন, হর্টিকালচার সেন্টার লংগদু উদ্যানতত্ত্ববিদ মোঃ মহিউদ্দীন, জেলা সমবায় কর্মকর্তা ইউসুফ হাসান চৌধুরী, যুব উন্নয়ন উপপরিচালক মোঃ শাহজাহান, নার্সিং ইনস্ট্রাকটর ইনচার্জ সীমা মন্ডল, বিএডিসি(সেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাহেদ, প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র চাকমা, হর্টিকালচার সেন্টার নানিয়ারচরের হর্টিকালচারিস্ট আল মামুন, বিএডিসি (বীজ) উপপরিচালক মোঃ লুৎফর রহমান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্টীর কালচারাল কর্মকর্তা শোভিত চাকমা, পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স এর ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়-য়া, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়--য়া, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সহকারী প্রকৌশলী সজল চক্রবর্তী, জেলা পিগ ফার্ম সহকারী পরিচালক ডা: মো: আতিকুর রহমান, উপসহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহের, জেলা সহকারী লাইব্রেরিয়ান সুনীলময় চাকমা, স্বাস্থ্য প্রকৌশলের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ অলিউর রহমান, হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী-কাপ্তাই উপ-পরিচালক নাসিম হায়দার, আরপিটিআই অধ্যক্ষ ওরায়দুর রহমান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তা অনুসিনথিয়াা চাকমা, জেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী পরিচালক ডা: বেবী ত্রিপুরা, জেলা সমাজসেবা উপপরিচালক মো: ওমর ফারুক এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা রাঙ্গামাটি জেলার করোনা পরিস্থিতির উপর সংক্ষিপ্ত বিবরণ সভায় উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, রাঙ্গামাটিতে সর্বশেষ (১৮ মার্চ পর্যন্ত) করোনা পজিটিভ আছেন ১২৯৫জন। সুস্থ হয়েছেন ১২৫৪জন। মোট মৃত্যু ১৬জন (সর্বশেষ মৃত্যু-০৬/১২/২০২০)। তিনি বলেন, ১৭ মার্চ পর্যন্ত কোভিডের টিকা নেওয়ার জন্য ৩৫৮১৯জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন এবং ১ম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন ২৬১৭৫জন। রাঙ্গামাটিতে টিকা গ্রহণের হার সন্তোষজনক। কোভিড রোগীদের জন্য ৫০ শয্যার স্বতন্ত্র কোভিড ইউনিট স্থাপনের কাজ খুব শীঘ্র শুরু হবে বলে তিনি সভাকে অবহিত করেন। রাঙ্গামাটিতে সংক্রমণের হার কিছুটা উর্ধমুখী। ৫ শতাংশের ওপরে। রাঙ্গামাটি যেহেতু একটি পর্যটন শহর সেহেতু সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আইনশৃংখলা কমিটির রেফারেন্স দিয়ে তিনি বলেন, মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রচারণার পাশাপাশি মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বিদ্যালয় ৩০ মার্চ এর মধ্যে খোলার প্রস্তুতি হিসাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক সকল স্কুল এর কক্ষ জীবানুমুক্ত করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃঞ্চ প্রসাদ মল্লিক বলেন, জেলার খাদ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। জেলার কৃষিযোগ্য আবাদি জমির পরিমান অত্যন্ত কম। এক ফসলী জমিকে দোফসলী এবং বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল ধানচাষের মাধ্যমে খাদ্য ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ফলবাগান চাষ বৃদ্ধির মাধ্যমেও বিকল্প আয়ের পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।
সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, সমাজসেবা বিভাগ থেকে প্রদত্ত সকল ভাতা অনলাইনে প্রদানের জন্য মিস ডাটা করা হচ্ছে। এখন থেকে সকল ভাতা বিকাশ এর মাধ্যমে প্রদান করা হবে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগে আক্রান্ত রোগীদেরকে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হবে।
সভা শেষে রাঙ্গামাটি জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক বেগম শাহাওয়াজকে বদলীজনিত কারণে বিদায় এবং পরিষদের পক্ষ থেকে পরিষদের মনোগ্রাম সম্বলিত ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।