গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এককালের প্রমত্তা বংশী নদী পুনঃ খননের অভাবে এখন প্রায় ভরাট ও ক্ষীণকায় হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে এক শ্রেণির ভূমি দস্যু নির্বিঘেœ বংশী নদীর জমি দখলে নিয়ে পাকা-আধা পাকা ঘর-বাড়ি ও ইটভাটাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে অবৈধভাবে ফায়দা লুটছে। দখলের কারণে আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী বংশী নদী।
সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, বংশী নদীর কালিয়াকৈর অংশের ১৫ কিঃ মিঃ গতি পথের প্রায় ১০ কিলোমিটারই নাব্যতা হারিয়ে কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে। দুই দশক পূর্বেও কালিয়াকৈর থেকে ধামরাই ত্রিমোহনা পর্যন্ত নদী পথের দু’ধারে শতাধিক সেচ প্রকল্প চালু ছিল। এর পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় বর্তমানে ওই প্রকল্প গুলোর ৮০ টিরও বেশী প্রকল্পের প্রায় ৫০ হাজার বিঘা ইরি জমিতে সেচ সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। বংশী নদীর ১৫ কিলোমিটার গতি পথের শতকরা ৫০ ভাগ জমিই এখন বেদখল হয়ে পড়েছে। বেশির ভাগ জায়গাতেই পাকা ও আধা পাকা বাড়ী ঘর তুলে গ্রাম বা আবাস ভূমি তৈরী করা হয়েছে। এমনকি নদী দখল করে কেহ ইটভাটা স্থাপন আবার কেউ নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। সরকারী ভাবে কাউকে লিজ দেয়া না হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা জোর যার মুল্লুক তার নীতিতে বংশী নদীর হাজার হাজার বিঘা জমি দখল করে চাষাবাদ করছে। বংশী নদীর চরাঞ্চল ও তীর মেপে পিলার বসিয়ে জবর দখলকৃত জমি সরকারী দখলে নিয়ে নদীটি খনন করার জন্য এলাকাবাসী জোর দাবী জানিয়েছে। নদীটি খনন করা হলে ১২ মাস এই নদী পথে মালামাল সংক্ষিপ্ত সময়ে রাজধানী সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে প্রেরণ ও আনয়ন সহজতর হবে। এ ছাড়া এর শতাধিক সেচ প্রকল্প ভূক্ত জমি পুনরায় চাষের আওতায় আসবে এবং ফসল ও মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মো: বজলুর রহমান জানান।উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আকতারুজ্জামান বলেন,জবর দখলের কারণে ঐতিহ্যবাহী বংশী নদী আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তিনি বংশী নদীর জমি থেকে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও নদীটি পুন: খননের দাবী জানান।
এব্যাপারে আলাপকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, সরজমিন তদন্ত করে বংশী নদী থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ ও বংশী নদী পুন:খননের উদ্যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করা হয়েছে।