রাজশাহী বিভাগে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার (২০ মার্চ) পর্যন্ত এ বিভাগে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আর এ বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ হাজার ৯৫ জন। রোববার (২১ মার্চ) রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রেরিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভাগের আট জেলায় মারা যাওয়া ৪০০ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বগুড়ায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজশাহীতে।
এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ জন, নওগাঁয় ২৬ জন, নাটোরে ১২ জন, জয়পুরহাটে ১০ জন, সিরাজগঞ্জে ১৮ জন এবং পাবনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর শনিবার (২০ মার্চ) বিভাগে নতুন ৪৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ দিন সুস্থ হয়েছেন ২০ জন। বিভাগে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ হাজার ৯৫ জন। এদের মধ্যে ২৪ হাজার ৫১৮ জন সুস্থ হয়েছেন। বিভাগে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ৪০ জন কোভিড-১৯ রোগী।
এদিকে করোনা প্রতিরোধে সারা দেশের ন্যয় রোববার (২১ মার্চ) জনসচেতনতায় মাঠে নামে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) পুলিশ। ‘মাস্ক পরার অভ্যাস করি, কোভিড মুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’ স্লোগানে রাজশাহীতে জনসচেতনতামূলক মানববন্ধন ও সমাবেশ করে মহানগর পুলিশ। ঢাকা সদর দফতর থেকে আইজিপির নির্দেশনায় রাজশাহী মহানগরীর ১২টি থানাসহ ট্রাফিক বিভাগে বিশেষ উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বোয়ালিয়া মডেল থানার উদ্যোগে সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বিভিন্ন বিপণিবিতান ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়।
এর আগে এদিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। এরপর বিশেষ উদ্বুদ্ধকরণ শোভাযাত্রা শেষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরএমপি বলেন, ‘এখন থেকে মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে পুলিশের নজরদারি থাকবে। আর এ সতর্ক করার পরও মাস্ক না পরে ঘুরে বেড়ালে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) মো. সুজায়েত ইসলাম, উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) সাজিদ হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমপি কমিশনার তার বক্তব্যে প্রতিটি দোকানে, গাড়িতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার জন্য এবং মাস্ক ছাড়া সেবা প্রদান করা না হয় সে ব্যাপারে অনুরোধ করেন। করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) রোধে সবাইকে একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।
এর পর 'মাস্ক পরার অভ্যেস, কোভিডমুক্ত বাংলাদেশ' এ স্লোগানকে সামনে রেখে তিনি সাহেব বাজার এলাকায় মার্কেটসমূহ পরিদর্শন করেন এবং মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন। এরপর তিনি শিরোইল বাসটার্মিনাল এলাকায় ট্রাফিক বিভাগ আয়োজিত বিশেষ উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের উদ্দেশে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন এবং মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন।