নীলফামারীর সৈয়দপুরে গত ২১ মার্চ শহরের বিভিন্ন এলাকায় রেলওয়ের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। রেলওয়ের পাকশি বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে সৈয়দপুর রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি বিভাগ এ অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযানে রেলওয়ের প্রায় ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি দখলমুক্ত করা হয়।
শহরের কাজিপাড়ায় অবৈধভাবে দখলকৃত রেলওয়ের কয়েকটি জলাশয় ও কৃষি জমি উদ্ধার করে তা স্পট নিলামের মাধ্যমে বৈধভাবে লিজ দেয়া হয়। এতে প্রায় ১৯ একর ৬ শতাংশ জমি দখলমুক্ত করা হয়। শহরের কলাহাটি রোডের পাশে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দু’টি দোকান ও একটি বাড়িও নিলামের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়। অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে এ সময় জরিমানা এবং নতুন করে লিজ দেয়ার মাধ্যমে প্রায় ৩৪ লাখ ৫ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়। শহরের নয়াবাজার ভাগার এলাকায় রেলওয়ের বিশাল জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা সৈয়দপুর পৌরসভা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার যৌথ প্রকল্প কো-কম্পোস্ট প্লান্ট বন্ধ করে দিয়ে তা জব্দ করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বৈধ বরাদ্দ বা লিজ নেয়ার পরই কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সময় এখানে কর্মরত সমাজকল্যাণ সংস্থার (এসকেএস) দুই সাব-ইঞ্জিনিয়ারকে আটক করা হয়। পরে পৌর পরিষদের কাউন্সিলররা তাদের অবিলম্বে রেলওয়ের কাছ থেকে বৈধ উপায়ে লিজ নিতে রাজি করালে এক ঘণ্টার কারাদ- শেষে তাদের মুক্তি দেয়া হয়। বিকেলে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক রোডে সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের পাশে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন ৬তলা বিশিষ্ট ভবনের অবকাঠামো জব্দ করে তা ৬ লাখ টাকা নিলামে বিক্রি করা হয়। এ ছাড়া জায়গাটুকু নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে আগামীতে বৈধভাবে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুজ্জামান বলেন, সরকার রেলওয়ের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। তাই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, দেশের যেখানে যত রেলওয়ের সম্পত্তি অবৈধ দখলে আছে, তা দখলমুক্ত করে রাজস্ব আয়ের খাতে পরিণত করতে হবে। এ নির্দেশের আলোকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সৈয়দপুরে অভিযান চালানো হলো। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই যে কোনো ধরনের এবং যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দখলকৃত রেলওয়ের জমি উদ্ধার করা করা হবে।
পার্বতীপুর রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কানুনগো মো. জিয়াউর রহমান, সৈয়দপুর সহকারী প্রকৌশলী মো. আহসান উদ্দিন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলাম, সৈয়দপুর রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ ইন্সপেক্টর মো. বেনজুর রহমানসহ নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।