যশোরের কেশবপুরে বিলখুকশিয়া ও সাতাশ বিলের সেচ কার্যক্রম মাঝপথে বন্ধ হওয়ায় আসন্ন বোরো মৌসুমে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমি আনাবাদি রয়ে গেছে বলে এলাকার কৃষকরা দাবি করেছে। এ সমস্যা নিরসনে গত মঙ্গলবার থেকে এলাকার শত শত কৃষক স্বেচ্ছাশ্রমে ওই বিলের পানি নিষ্কাশনে ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ডের জলকপাটের পলি অপসারণ কাজ চলিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীনদী ভরাটের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, কেশবপুরের পূর্বাংশের বিলখুকশিয়া ও সাতাশ বিলে ১ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। ঘেরের পানি নিষ্কাশন করে বছরের একমাত্র ফসল বোরো আবাদের শর্তে এ সমস্ত জমিতে মৎস্য ব্যবসায়ীরা মাছের ঘের করেছেন। শ্রীনদী ভরাটের কারণে চলতি বছর মনিরামপুর, কেশবপুরের বিলখুকশিয়া ও সাতাশ বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়ায় বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ লক্ষ্যে গত ৯ জানুয়ারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম রুহুল আমীনকে আহবায়ক, উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মফিজুর রহমানকে সদস্য সচিব ও সুফলাকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম মুনজুর রহমানকে কোষাধ্যক্ষ করে বিলের পানি নিষ্কাশন নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি নামের ১৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। গত ১৫ জানুয়ারী থেকে বিলখুকশিয়ার ওয়াপদা বেঁড়িবাধের ওপর ১২৮ টি ডিজেল চালিত সেচ পাম্প দিয়ে এ প্রকল্পের সেচ কার্যক্রম শুরু করা হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী বিলখুকশিয়া ও সাতাশ বিল এলাকা জলাবদ্ধ রেখেই সেচ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে মনিরামপুর ও কেশবপুরের ২ হাজার হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হয়। এসব জমিতে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদিত হতো। এতে কৃষকরা ২৫ কোটি টাকার ক্ষতির সন্মুখিন হয়েছেন।
কমিটির কোষাধ্যক্ষ এসএম মুনজুর রহমান বলেন, বিলখুকশিয়া ও সাতাশ বিলের পানি নিষ্কাশনে ১২৮টি ডিজেল চালিত সেচ পাম্প বসানো হয়েছিল। এরমধ্যে ১২৬টি চালু ছিল। এক মাসের অধিক সেচ কার্যক্রম চালাতে প্রায় ৮০ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। এরমধ্যে ঘের মালিক ও এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে ৬২ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছিল। অর্থাভাবে শেষ পর্যন্ত সেচ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। সুফলাকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাস্টার আবদুস সামাদ বলেন, পানি নিষ্কাশন কাজ মাঝপথে বন্ধ হওয়ায় এলাকার শত শত কৃষক গত মঙ্গলবার থেকে ওই বিলের পানি নিষ্কাশনে শ্রীনদীর ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ডের জলকপাটের দু‘পাশের পলি স্বেচ্ছাশ্রমে অপসারণ কাজ চলিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম দিনেই জলকপাটের দুটি কপাট খুলে দেয়া হয়েছে। এতে দ্রুত বিলের পানি নামছ্ েফলে নদীর গভীরতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুন্সি আছাদুল্লাহ বলেন, ৬ মাস আগে খালটি খনন করা হলেও শ্রীনদীতে ব্যাপকভাবে পলি জমছে। যে কারণে কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার পলিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ভবদহ প্রকল্পের মধ্যে শ্রীনদী অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৮৮০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যার সমাধান হবে না। #ছবি-ইমেইলে।