শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারামারী বাজারের পাশে আন্ধারোপাড়া গ্রামের মাংস বিক্রেতা মফিজ উদ্দিনের শিশু তামিম (৮) চেল্লাখালী নদীর ফরেস্টার অফিসের ঘাটে গভীর খাদে গোসল করতে এসে বৃহস্পতিবার পানিতে ডুবে মৃুত্য বরন করেছে। শিশু তামিম পলাশীকুড়া বারোমারী বাজারের নুরানিয়া হাফেজিয়া মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। তামিমের লাশ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টায় ডুবুরীদল উদ্ধার করে।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, বুকভরা আশা নিয়ে বাবা-মা আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য শিশু তামিম কে মাদরাসায় ভর্তি করে। স্বপ্ন ছিল ছেলে কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হবে। প্রতিদিনের মতো তামিম গত বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে মাদরাসায় চলে আসে। বেলা সারে ১২ টার দিকে সে সহপাঠীদের সাথে গোসল করতে নদীতে নামে। সেখানেই ছিল বালু উত্তোলনের কারণে সৃষ্ট হওয়া ৪০/৫ ফুট গভীর গর্ত। গোসলের সময় কখন যে তামিম তলিয়ে গেছে কেউ তা বলতে পারে না। মাদরাসার হুজুর এসে সকল শিক্ষার্থীদের ধমক দিয়ে সেখান থেকে নিয়ে আসে। কিন্তু তামিমের কোন খবর তাৎক্ষনিক ভাবে পাওয়া যায়নি। হুজুর তামিমের বাড়ীতে খবর দেয়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও তামিম বাড়ি ফিরে আসেনি। বাবা খুঁজতে আসে মাদরাসায়। তখনও তার কোনো সন্ধান মিলেনি। তামিম নিখোঁজের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে সবাই তাকে খুঁজতে থাকে বিভিন্ন জায়গায়। অবশেষে তামিমের পড়নের পাজামার সন্ধান পাওয়া যায় নদীর তীরে। সকলের সন্দেহ হয় হয়তোবা এই গভীর গর্তেই তলিয়ে গেছে তামিম। থানা পুলিশসহ ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে হাজির হয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। পরদিন শুক্রবার ভোরে জামালপুর সদর ফায়ার সার্ভিসের টিম ডুবুরি দল নিয়ে হাজির হয় নদীতে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলে তাদের উদ্ধার অভিযান। ডুবুরি রফিকুল ইসলাম তামিমের নিথর দেহ পানির তলদেশ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে ভেসে নিয়ে ওঠে আসে। বাবা মা আত্মীয় স্বজনের আহাজারিতে তখন ভারী হয়ে ওঠে চারদিকের পরিবেশ।