রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাইয়ে বন্যহাতির আক্রমণে গত দুই বছরের পর্যটকসহ ৬ জনের মৃত্যু ও বন্য হাতির উৎপাত বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ঘটনার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের পক্ষ হতে বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বের জন্য কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন এলাকার সড়কে হাতি চলাচলের প্রবেশমুখ শিলছড়ি হাতির গেইট প্রবেশমুখ, নৌবাহিনী সড়ক ও কামিল্লাছড়ি-আসামবস্তি সড়কের প্রবেশমুখ এলাকায় "সাবধান বন্যহাতির চলাচলের পথ!" সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, চলতি মাসের ৭ মার্চ নৌবাহিনী সড়ক বন উন্নয়ন ছাত্রাবাস এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন ৪৫ বছরের একজনকে হামলা করে হাত, পা, ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে মেরে ফেলে বন্যহাতির দল। আর সর্বশেষ ১১ মার্চ কাপ্তাই-আসামবস্তী’র সড়কের কামাইল্যাছড়ি এলাকায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ঢাকা তেঁজগাও টেক্সটাইল বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিষেক (২১)। ৫দিনের ব্যবধানে ২জনের নির্মম মৃত্যু হওয়ায় এই অঞ্চলের আগত পর্যটক, গাড়ীর চালকএবং এলাকাবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও রফিকুজ্জামান শাহ জানান, বন্যহাতির আক্রমণে ইদানীং পরপর কয়েকটি হতাহতের ঘটনা ঘটায় আমরা বিভিন্ন গুরুপূর্ণ পয়েন্টে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সর্তকতামূলক এই সাইন বোর্ডগুলো লাগানোর ব্যবস্থা করেছি। আশা করি সকলে এ সাইন বোর্ড দেখে সর্তকতা ভাবে চলাচল করবে।
তিনি আরো বলেন, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের আওতাধীন এলাকায় হাতির আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগামী অর্থ বছরের আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ৪ কিলোমিটার ফেন্সিং সোলার নির্মাণ করা হবে। এই অর্থ বছরে হওয়ার কথা খালেও অর্থ ছাড় না হওয়ার কারণে তা করা হয়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মহসিন তালুকদার জানান, চলতি মার্চ মাসে ৬ দিনের ব্যবধানে বন্যহাতির আক্রমণে পর্যটকসহ দু'জন নিহত হওয়ার কাপ্তাইয়ে পর্যটকসহ স্থানীয় লোকজন বন ও বন্যপ্রাণীর চলাচলের পথে যাতে চলাচল করতে না পারে সেই জন্য সর্তকর্তামূলক এই ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
এব্যাপারে কাপ্তাই উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, বন্য হাতির আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে সকাল ৯টার পূর্বে এবং বিকাল ৫টার পর কাপ্তাই-আসামবস্তী এবং নৌ বাহিনীর সড়কে চলাচল না করার জন্য অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন কাপ্তাই রেঞ্জের নৌবাহিনী সড়ক, আগরবাগান, ব্যাংছড়ি, শিল্প এলাকা, কামাইল্যাছড়ি, জীবতলী এলাকায় বিগত কয়েক বছর যাবৎ বন্য হাতির উপদ্রব বৃদ্ধি অনেকগুন। বনের মধ্যে পর্যাপ্ত খাবার না থাকা এবং বন উজার হওয়ার কারণে লোকালয়ে খাদ্যের সন্ধ্যানে এসে বন্য হাতির দল হামলা করছে এবং মানুষের বসতবাড়িসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে।