বিশেষ কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠি, মহল ও দল নহে। অনেকদিন ধরে রুট লেভেল থেকে শুরু করে ওপর পর্যন্ত কিছু কথা প্রচলিত রয়েছে। যেমন সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর ও পিজিপি সম্পর্কে। যাকে বলা হয়ে থাকে Present government party ev Power government party বা পিজিপি। অর্থাৎ যে সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে সেই সরকারের আজ্ঞাবাহিতা। একটা শ্রেণীকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে বেসামরিক, সামরিক, আধা সামরিকসহ দেশে যে কোন ধরণের সরকার ক্ষমতায় এসেছে ওরা কাহারও পায়রুবি, আজ্ঞাবাহিতা বা খয়ের খাঁ গিরি করতে দ্বিধা সংকোচ ও কুন্ঠাবোধ করেনি। আবার সরকারের পরিবর্তন বা পতন হলে নতুন সরকার শপথ নেয়ার আগেই এ শ্রেণীটা তাদেরকে বর্ণাঢ্য আয়োজন করে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করতে ভুল করেনি।
যে কারণে তাদেরকে দেশের মানুষ চিহ্নিত সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর ও পিজিপি হিসেবে আখ্যায়িত ও মনে করে থাকে। ওরা শুধু দল পরিবর্তনই করে না, বেশভূষায়ও পরিবর্তন করতে সিদ্ধহস্ত। যদিও তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট দর্শন বা রাজনীতি নেই। এ শ্রেণীটা শুধু রাজনীতিকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নহে। ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, সাংবাদিক, শিল্পী থেকে শুরু করে শাসন, প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সবশ্রেণী পেশাতেই কমবেশী দেখা যায়। যাদের বেরসিক চরিত্রের শেষ নেই।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দুঃখজনক ও মর্মান্তিকভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপরিবারে মৃত্যু, ৮১ সালের ৩০ মে নির্মমভাবে জিয়াউর রহমানের মৃত্যু ও ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এইচ.এম এরশাদের পতন হলে সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর, প্রেজেন্ট গভর্নমেন্ট পার্টির (পিজিপি) লোকদিগকে দেশের জনগণ সেভাবেই তাদেরকে দেখে থাকে। পরবর্তী সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে এ শ্রেণীটাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের ত্যাগী কান্ডারীদের সরিয়ে দিয়ে নিজেদের জায়গা করে নিতে ক্যারিশমেটিক ম্যাজিকের পথ অনুস্মরণ করে থাকে। যার ব্যাখ্যা বিশ্লেষনের প্রয়োজন আছে বলে অনেকেই উপলব্ধি করে না।
এইচ.এম এরশাদ সেনাপ্রধান হিসেবে যখন সাংবিধানিক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে সরিয়ে সামরিক উর্দি পড়ে ক্ষমতায় আসার পর তখন এ শ্রেণীটাই (পিজিপি) এরশাদকে সমর্থন দেয় এবং ২০০ হাত ফুলের তোড়া দিয়ে সি.এম.এল.এ সচিবালয়ে গলদঘর্ম অনুষ্ঠান করে বরণ করে থাকে। বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমানের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর চিহ্নিত সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর ও পিজিপির এ সমস্ত লোকজন সরে দাঁড়ায়। সে দিনের দেশী, বিদেশী অগনিত গণমাধ্যমে রয়েছে এর সচিত্র প্রতিবেদন, সংবাদ ও ক্যামেরায় বন্দী দুর্লভ ছবি। আবার রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় ৯১ সালে বিএনপি, ৯৬ সালের ১২ জুন আওয়ামী লীগ, ২০০১ সালে বিএনপি, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে এই চিহ্নিত কুশীলবরাই দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের ডিঙিয়ে সরকারের সাথে হাত মিলাতে দ্বিধা সংকোচ ও কুণ্ঠাবোধ করেনি। ইহাই বাস্তবতা। এর সাথে প্রমাণ সাপেক্ষে রয়েছে ইতিহাস ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাস্তবতার নিদর্শন। যদিও নিবন্ধটির প্রারম্ভেই বলা হয়েছে, যা কোনো বিশেষ ব্যক্তি, গোষ্ঠি, মহল, দল ও শাসন প্রশাসনের কাহাকেও উদ্দেশ্য করে আলোকপাত করা হয়নি।
রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিন আহমদকে সরিয়ে আধা সামরিক লেবাসে ২০০৭ সালের ১/১১, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে ব্যাংকার ফখরুদ্দীন ও সেনা প্রধান মইন-উ-আহমদ ক্ষমতায় আসে। তখন কিছু সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী স্বার্থপর, শিল্পপতি, রাজনীতিক, শাসন প্রশাসনের কিছু পিজিপি মার্কা চিহ্নিত লোক ও কিছু সাংবাদিক ওদেরকে সমর্থন জানায়। সেই সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাাজনো মামলায় আটক করা হয়। শেরে বাংলা নগরের ক্যাঙ্গারো কোর্টের মাধ্যমে প্রহসনের নামে বিচারের মুখোমুখি করতে সংকোচ বোধ করেনি। যা দেশের মানুষের কাম্য ছিল না। সেই সময়েও ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা কিছু সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর ও পিজিপি মার্কা রাজনীতিক ও শাসন প্রশাসনের মার্কা মারা লোকজন ফখরুদ্দিন মইনুদ্দিনকে সমর্থন জানিয়ে থাকে। যদিও ওদের (পিজিপি) কারসাজিতেই এক সময় এইচ.এম এরশাদ সেনা লেবাস পরে ক্ষমতায় আসে এবং তেজগাঁওয়ের সি.এম.এল.এ সচিবালয়ে বসে সব রাজনৈতিক দলের কার্যকলাপ বন্ধ করে বা ব্যান্ড করে প্রথমে ১৮ দফা, নতুন বাংলা যুব সংহতি, নতুন বাংলা ছাত্র সমাজ, নতুন বাংলা শ্রমিক ফেডারেশন, জনদল ও ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি গঠন করে থাকে। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় সংসদের প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় পাকাপোক্তভাবে থাকার ব্যবস্থা করে থাকে। ৮৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ গ্রহণ করেন সংসদের বিরোধী দল উপবিষ্ট হলেও বিএনপি তাতে অংশগ্রহণ করেনি। তবে ৮৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অংশ গ্রহণ করেনি। যদিও আ.স.ম রবের নেতৃত্বে নামসর্বস্ব ২৩ দলীয় কম্বাইন্ড অপজিশন পার্টি (ঈড়সনরহবফ ড়ঢ়ঢ়ড়ংরঃরড়হ ঢ়ধৎঃু) বা সম্মিলিত বিরোধী দল সংসদের বিরোধী দলের আসনে উপবিষ্ট হয়ে থাকে।
১৯৭৫ সালে মর্মান্তিকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু হলে আওয়ামী লীগের একটা সুবিধাবাদী, সুবিদাভোগী স্বার্থপর অংশ, পিজিপি, শাসন প্রশাসনের একটা স্বার্থপর চিহ্নিত গোষ্ঠি রাজনীতিতে পিজিপি বা প্রেজেন্ট গর্ভনমেন্ট পার্টি হিসেবে সুবিন্যস্থ শ্রেণীটা প্রথমে খন্দকার মোস্তাকের মন্ত্রী পরিষদ, সরকারের বড় বড় পদে ও পরবর্তী সময় জিয়ার মন্ত্রী পরিষদে হুমড়ি খেয়ে যোগদান করে থাকে। এদিকে জিয়াউর রহমান ৭৫ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথমে ১৯ দফা, জাগদল, জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট ও পরবর্তী সময় ৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠন করলে সেখানেও তাদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো অবস্থা হয়। এদিকে জিয়াউর রহমান ৭৯ সালে সংসদ নির্বাচন দিলে আওয়ামী লীগ তাতে অংশগ্রহণ করে এবং কিশোরগঞ্জের আসাদুজ্জামান খান সংসদের বিরোধী দলের নেতার আসনে উপবিষ্ট হয়ে থাকে।
আরেকটা বিষয় লক্ষ্য করার মতো তা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল ও বামমোর্চ্চার নেতৃত্বে ৫ দলের আন্দোলন ও জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত সহযোগিতায় ৯০ এর ৬ ডিসেম্বর এরশাদের পতনের পর এই তিনটি জোটের রূপরেখা অনুসারে এরশাদ ও এরশাদ পন্থিদের স্বৈরাচারের দোসর ও গণদুশমন হিসেবে ঘোষনা করা হয়ে থাকে। এমনকি তাদেরকে কোনো রাজনৈতিক দলে না নেয়ার ব্যাপারে রূপরেখায় ঐকমত্য ঘোষিত হয়। কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা যায়, এরশাদের জাতীয় পার্টি কিছুদিন বিএনপির সাথে থাকে। তারপর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত ১৪ দলীয় মহাজোটে যোগদান করে। প্রথমে এরশাদ ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর মন্ত্রীর মর্যাদায় বিদেশ দূত এবং বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যোগদান করে। এরশাদের সহধর্মিনী সংসদের বিরোধী দলের আসনে উপবিষ্ট হয়। তারপর ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সরকারের মন্ত্রীসভা থেকে জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে রওশন এরশাদকে সংসদের বিরোধী দলের আসনে অলংকিত করা হয়। যদিও আজ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি.এম কাদের ঘোষনা করেছেন, আমরা ১৪ দলীয় জোটে নেই। অপরদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিরুদ্ধে সমালোচনা করে বলেছেন, এ দুটি দল দেশের সমূহ ক্ষতি করেছে। অনেকেই মনে করে থাকে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা না করলে ওদের কোনো অস্থিত্বই টিকে থাকত না। বরং বানের পানিতে ভেসে আসা ছাগল, ভেড়া ও মরা গরু মহিষের অবস্থা হত। এমনিকে বানের পানিতে ভেসে আসা মানুষ, গরু ছাগলকে যেভাবে শকুনের দল ঠোঁট দিয়ে ক্ষত, বিক্ষত ও ভক্ষণ করে সে বর্ণনায় আর যাচ্ছি না।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে মাঠের বিরোধী দলের ভূমিকায় রয়েছে। এই দলের নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট গঠন করা হলেও, মাঠে ময়দানে অন্যান্য শরীক দলগুলোর কমই লক্ষ্য করা যায়। প্রায় সময় ২০ দলীয় জোটের অনেক শরীক দলের বিবৃতি দেখা
গেলও বাস্তবে এর প্রতিফলন কমই দেখা যায়। তারপরও বিএনপি প্রতিদিন মাঠে ময়দানে বিভিন্ন সমাবেশ ও প্রেসকনফারেন্স করে সরকারের দোষ ত্রুটি ধরিয়ে সমালোচনা করে যাচ্ছে। এক সময় বিএনপিকে ইধংরপধষু হড় ঢ়ধৎঃু বলা হলেও আজ এই অপবাদ শুনা যায়নি। তবে এক সময় তথাকথিত হাওয়া ভবনের নেতা ও বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দন্ডাদেশ নিয়ে লন্ডনে বসে যেমনি দলকে নির্দেশনা দিচ্ছেন, তেমনি ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারাদন্ডাদেশের পর সরকারের অনুকম্পায় পরপর ৩ বার অনুকম্পা পেয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ অবস্থায় গুলশানের ভাড়া করা ফিরোজা ভবনে রাজনীতি থেকে দূরে বসবাস করছেন।
এসব থেকে দৃশ্যমান হয় রাজনীতি আর রাজনীতির জায়গায় নেই। তাতে সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর ও পিজিপির যেন জয় জয়কার। যতদিন পর্যন্ত ক্ষমতার রাজনীতি থেকে এ শ্রেণীটার পথরুদ্ধ না হবে, ততদিন পর্যন্ত দেশে যেমন সুন্দর রাজনীতির পরিবেশ ও বিকাশ ঘটবে না তেমনি রাজনীতিকে ঘিরে চামচা, চাটুকারীতা, সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর ও পিজিপির গলদঘর্ম ও পদচারণা কমার লক্ষণ নেই বলে অভিজ্ঞজনরা মনে কারে থাকে। এ অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে শাসন, প্রশাসনেও বিদ্যমান ও পরিলক্ষিত। ওরা জবাবদিহীতার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন রাজনীতির দোহাই দিয়ে ধরাকে সরা মনে করে যা করার না তাও করে যাচ্ছে। অনেক সময় স্বার্ধসিদ্ধির মারপ্যাচে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ, নির্দেশ না জানার ঘটনা অহরহ দৃশ্যপটে চলে আসছে। যা ভাবতে গেলে অনেকেরই অবাক ও বিষ্ময় হতে হয়। অনেক সময় এ শ্রেণীটা অনেক স্বার্থের কারণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে হেয়, খাটো ও তিরস্কৃত করার জন্যে অনেক ন্যায় নিষ্ঠাবান আদর্শবান কর্মকর্তা, কর্মচারীকে পাক হানাদার বাহিনীর দালাল ও রাজকার বলে গালিগালাজ করতেও সংকোচবোধ করে না। যদিও এ সমস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেরই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জন্ম হওয়ার কারণে কুলাঙ্গার পাকহানাদার ও তাদের তল্পীবাহক কুখ্যাত রাজাকারদের ঘৃন্য, জঘন্য ও নৃশংস কার্যকলাপ দেখার সুযোগই হয়নি।
এ নিবন্ধে জানা মতে একটি ঘটনা সংক্ষিপ্তভাবে না বলেই পারছি না। আমি মওলানা ভাসানীর পুত্র আবু নাসের খান ভাসানীর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও পারিবারিক একান্ত সাহচর্যে ছিলাম। তিনি এক সময় খাদ্য ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ওনার অগনিত হিতাকাংখী, রাজনৈতিক সহচর ও মওলানা ভাসানীর শিষ্য, ভক্ত ও রাজনৈতিক অনুসারীদের কমতি ছিলনা। তিনি সাপ্তাহিক প্রাচ্যবার্তারও প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ছিলেন। এক সময় তাঁর ১২৬ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকার অফিসে বিভিন্ন শ্রেণীপেশা ও রাজনৈতিক লোকদের সকল সময় সমাগম থাকত। যেদিন তিনি ১৯৮৬ সালে ভোররাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার রাজারবাগের ভাড়াটিয়া বাসায় ইন্তেকাল করেন সেদিনও আমি তাঁর পাশে ছিলাম। কিন্তু লাশ যখন টাঙ্গাইলের সন্তোষে সমাহিত করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন তার পাশে রাতদিন যারা আকড়িয়ে থাকত, ঘুর ঘুর করতো তাদের মধ্যে অনেকেরই দেখা মেলেনি। সেই সময় তাঁর পাশে ছিলেন সহধর্মীনি পারভীন নাসের খান ভাসানী, পুত্র পরাগ, পরশ ও মেয়ে রুমু শিলু ও আত্মীয়স্বজন। আরও উপস্থিত ছিলেন তার ভগ্নিপতি এডভোকেট সবুর সাহেব, বোন ও ভাইগ্না ভাগ্নি। এছাড়া গাইবান্ধার আবদুস সোবহান, কাজী জাফর আহমদ, নূর মোহাম্মদ খান, চট্টগ্রামের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ভাসানী ন্যাপ নেতা গোলাম কবীর প্রমুখ। অর্থাৎ দুঃসময়ে সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর ও পিজিপির অনেককেই সেদিন দেখা যায়নি।
কবির পংক্তিতে বলব, “কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে কভু আশি বিষে দংশেনি যারে।” একজন প্রথিতযশা প্রবাসী সাংবাদিক ও কলামিস্টের উদ্ধৃতি টেনে বলব “দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কিন্তু কান্ডারী হুঁশিয়ার (যুগান্তর ০৮/৩/২১ ইং)। পরিশেষে নিবন্ধের ইতি টেনে আবারও বলব সাধু সাবধান। সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী, স্বার্থপর, প্রেজেন্ট গর্ভনমেন্ট পার্টি (পিজিপি) বা প্রেজেন্ট পাওয়ার পার্টির ভালো করে দেখে, জেনে ও শুনে সামনে চলাই হোক পাথেয়। স্বার্থ ফুড়িয়ে গেলে ওদেরকে দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না। যার রয়েছে দৃশ্যপটে উপমা, উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত।
(এ.কে.এম শামছুল হক রেনু)
লেখক কলামিষ্ট