নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদীর জেগে উঠা বালুচরে হচ্ছে মরিচের চাষ। চলতি মৌসুমে ওই বালুচরে মরিচের বাম্পার ফলন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে মরিচসহ নানাবিধ ফসলে ভরে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল। তিস্তার কড়াল গ্রাসে ভাঙ্গনের শিকার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো পুনরায় চরে ফিরে চাষাবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায় তাদের জমির ফসল। তখন নদী ভাঙ্গনের শিকার ওই পরিবারগুলো তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন। বর্ষা মৌসুম চলে গেলে ক্ষতিগ্রস্থ ওই পরিবারগুলো নদীর চরে জেগে উঠা বালুচরে চাষাবাদ শুরু করে। বালুচরে সবুজ শস্য শ্যামল ফসলের সমাহার দেখে খুশীতে মন ভরে ওঠে চরের কৃষকের।
প্রতি বছরেই নদী ভাঙ্গনের শিকার হয় তিস্তা নদী কবলিত এলাকার পরিবারগুলো। তবু তারা জীবন জীবিকার তাগিদে তিস্তা কবলিত জেগে উঠা চরে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলিয়ে আবার বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে।
জেগে উঠা তিস্তা নদীর চর এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। চরাঞ্চলের হাজার হাজার একর জমিতে এখন চাষাবাদ করা হচ্ছে মরিচ, গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন, পিঁয়াজ, রসুন, টমেটো, বাদাম, সরিষা, তিল, তিশি, তামাক, কুমড়া ও নানা প্রজাতির শাকসবজি। ২৯ মার্চ খালিশা চাপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর চর গ্রামের মানিক মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, এবারে নিজে ১.৫ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছে। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। ফলন ভাল হলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা মরিচ বিক্রি হয় এক বিঘা জমিতে। ৫ থেকে ৬ মাস ধরে জমি থেকে মরিচ তোলা যায়। স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় চরের কৃষকরা এখন মরিচসহ একইসাথে নানাবিধ তরিতরকারি চাষে ঝুকে পড়েছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাজারে মরিচের দাম ভাল। প্রতি কেজি মরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। সে কারণে চরের কৃষকেরা এখন অনেক খুশি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী জানান, চলতি মৌসুমে ১শ ৪০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। পলি জমে থাকার কারণে চরের জমি অনেক উর্বর। যার কারণে যে কোন প্রকার ফসলের ফলন ভাল হয়। তিনি বলেন, চরের কৃষকরা নিজে পরিজন নিয়ে জমিতে কাজ করে। সেই কারণে তারা অনেক লাভবান হয়ে থাকে।