সরাইলে জোনাকি বেগম (১৭) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে সরাইল থানা পুলিশ। গত বুধবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের বড়াইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে স্বামী ইসমাইল ও তার পরিবারের লোকজন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ স্বামী পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে জোনাকিকে। আর স্বামীর স্বজনরা বলছেন ন্যামকিন ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন জানায়, চুন্টা ইউনিয়নের বড়াইল গ্রামের আবু তালেব মিয়ার ছেলে মো. ইসমাইল (২৫)। ইসমাইল ঘরে স্ত্রী সন্তান রেখেও ৮/৯ মাস আগে একই ইউনিয়নের ঘাগরাজোর গ্রামের ঘাগরাজোর গ্রামের জাহের মিয়ার মেয়ে ও নিজের শালিকা জনিকে ফুসলিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। এর আগে ৭/৮ বছর আগে এই জনির আপন বড় বোনকে বিয়ে করেছে ইসমাইল। নিরূপায় হয়ে পরিবারের লোকজন প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া সত্বেও বড় বোনের স্বামী ইসমাইলের কাছে জোনাকিকে বিয়ে দেন। জোনাকির আপন বড় বোনই হয়ে যায় তার সতীন। বিয়ের কিছু দিন পরই ইসমাইলের আগের স্ত্রী জোনাকির বড় বোনকে ডিভোর্স দিয়ে ১ লাখ টাকা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। শিশু দুই ছেলে সন্তান নিয়ে চলে যায় জোনাকির বড় বোন। সম্প্রতি জোনাকির সাথে সম্পর্ক খুব একটা ভাল যাচ্ছিল না ইসমাইলের। আবার আজবপুরের (নরসিংহপুর) প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারি ঘরও পেয়েছে ইসমাইল। সেখানেই মাঝে মধ্যে থাকেন তারা। আর বেশীর ভাগ সময় থাকেন বড়াইল নিজের বাড়িতে। পারিবারিক বিষয় নিয়ে গত বুধবার স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া হয়। ফলে সেখান থেকে রাতে তারা বড়াইলে চলে আসেন। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় চাউর হয় ইসমাইল দ্বিতীয় জোনাকিকে মেরে ফেলেছে। ঠিকই জনির লাশ ঘরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। মৃত্যুটি রহস্যজনক এমন আলোচনা শুরূ হলে জনি ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। জোনাকির বাবার বাড়ির লোকজন অভিযোগ করে বলেন, জনিকে ইসমাইল পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ফেলেছে। জোনাকির স্বজনরা বলছেন, হত্যা নয়। জনি স্বামীর সাথে রাগ করে ন্যাপকিন ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। অনেকে বলছেন বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছে। জোনাকির ভাই আতাবুল্লাহ বলেন, শ্বাসরোধ করে মুখে চেপে ধরে আমার বোনকে ইসমাইলসহ পরিবারের ৫-৬ জন মিলে হত্যা করেছে। সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এস আই মো. জাকির হোসেন খন্দকার বলেন, জোনাকির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদরে পাঠিয়েছি। লাশের গায়ে আগাতের তেমন কোন চিহ্ন নেই। হাতে ক্যানোলা ও প্রসাবের রাস্তায় ক্যাথেটার লাগানো ছিল। ইউডি মামলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।