ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশে সফরের প্রতিবাদে গত শনিবার ২৭ মার্চ সরাইলের অরূয়াইলে হেফাজতের বিক্ষোভ মিছিল পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা ভাংচুরের সময় ২৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরের দিন সেখান থেকে সাময়িক ভাবে পুলিশ ফাঁড়ি প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেখানে অবস্থানকারী পুলিশ সদস্যদের সরাইল থানায় নিয়ে এসেছেন কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার পুলিশবাদী হয়ে ১২ শতাধিক লোকের বিরূদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। গভীর রাতে চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, হেফাজতের হরতালের আগের দিন বিকেল বেলায় মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা হোসাঈন ও ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক নূর উদ্দিনের নেতৃত্বে অরূয়াইল আবদুস সাত্তার ডিগ্রী কলেজ মাঠে প্রথমে সভা হয়। সভায় ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু কিশোর ও যুবকরা লাঠিসোটা হাতে মিছিল করে এসে যোগ দেয়। এরপর তারা মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে অশ্লিল ভাষায় স্লোগান দিয়ে গোটা অরূয়াইল বাজার ঘুরে। বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের পুলিশ ফাঁড়িতে তখন ২৩-২৫ জন পুলিশ সদস্য অবস্থান করছিলেন। পুলিশ সদস্যরা কেউই থানা থেকে বের হননি। বিকেল ৪টার পর ২ সহস্রাধিক লোক জড়ো হয়। তারা মিছিল করে গিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। নিচ থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। একসময় ফাঁড়ির দরজা জানালা ভেঙ্গে ফেলে। ফাঁড়ির প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে শুরূ করে। তখন বিক্ষোভকারীরা আস্তে আস্তে পিছু হটে। ততক্ষণে পুলিশের ২৫ জন সদস্যই আহত হন। সেখানে অবস্থানকারী পুলিশ সদস্যদের উপর হামলার সময় ওই এলাকার কেউ এগিয়ে আসেননি। এমনকি তাদেরকে রক্ষার চেষ্টাও কেউ করেননি। নিরাপত্তার কথা ভেবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে সাময়িক ভাবে ২৮ মার্চ সেখান থেকে পুলিশ ফাঁড়ি প্রত্যাহার করে সরাইল থানায় নিয়ে আসা হয়। এসব ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার এস আই সজল বাদী হয়ে সরাইল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১২ শতাধিক লোককে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে অরূয়াইল থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-ইসলাম মিয়া ওরফে ইসলাম উদ্দিন (৪৬), জব্বার (২৮) আবু বক্কর (৩২)। প্রথম দুইজন মামলার এজহার নামীয় আসামী। সরাইল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) এএমএম নাজমুল আহমেদ বলেন, বিনা কারণে নাশকতা সৃষ্টিকারী কেউ ছাড় পাবে না। পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।