নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে পীরের অস্তানায় চিৎিসাধীন অবস্থায় সামছুল হক (৪৫) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় কিশোরগঞ্জ-তারাগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন মুশা গড়েরপারে ঘটনাটি ঘটে। মৃত ওই রোগীর বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
এলাকাবাসি জানায়, সদর ইউনিয়নের মুশা গড়েরপার গ্রামের মৃত আহাম্মাদ আলীর ছেলে আশরাফ আলী প্রথমে লেপ তোশকের ব্যবসা করছিলেন। পরে তিনি কিশোরগঞ্জের ফুটপাতে আংটি, ব্যাসলেট ও তাবিজ বিক্রি করে সংসার চালান। হঠাৎ এসব বাদ দিয়ে দরজায় কাটা পীর দরবার শরীফ.....লিখে বাড়ির ভিতরে আস্তানা গেড়ে কবিরাজি চালু করেন। বাড়িতে অনুসারীদের অবস্থান ও গাঁজা সেবনসহ তার ভন্ডামি কার্যকালাপ দেখে পরিবারের লোকজন অন্যত্র থাকেন।
বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাড়িতে রোগীর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তার আস্তানায় মৃত রোগীর শোয়ানো লাশ, চিকিৎসা সামগ্রীসহ পীর আশরাফ আলী ও তার দুই অনুসারীকে দেখতে পান। পীর ও তার অনুসারীদের হ্যান্ডক্যাপ পড়ানোর পর তাদের অসংলগ্ন আচরণ ও কথাবার্তায় একপর্যায়ে হ্যান্ডক্যাপ খুলে দেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অজ্ঞাত ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
কাটা পীর আশরাফ আলী তার আস্তানায় ওই রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে জানান, অসুস্থ রোগীকে রোববার রাস্তা থেকে এনেছি। চিকিৎসা দিয়ে সেবা করার চেষ্টাকালে তার মৃত্যু হয়েছে। তার রুহু জান্নাতে গেছে। আমার রুহু তার সঙ্গে আছে। মৃত রোগীর নাম ছামছুল। বাড়ির ঠিকানা কচুয়া, আর কিছু জানি না।
এসময় পুলিশ ও উপস্থিত লোকজন তার দুই অনুসারীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু কারো কোন কথায় তারা কর্ণপাত করেন না এবং কোন প্রশ্নের উত্তর দেন না। পরে পীর আশরাফের হুকুমে এক অনুসারী ভিন্ন ভাষায় কথা বলায় এলাকাবাসী তাকে রোহীঙ্গা হিসেবে সন্দেহ করেন। অপর একজন অনুসারী কুষ্টিয়া ভেড়ামার খোকনের ছেলে তুফান বলে নিজের পরিচয় দেন।
এব্যাপারে কিশোরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল আউয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে এটা নরমল ডেথ মনে হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্তের জন্য পিবিআই এসেছিল। সম্ভবত তার এনআইডি কার্ড হয়নি। একারণে তার ফিঙ্গার ম্যাচ করেনি। তাই এখন পর্যন্ত লাশের পরিচয় মেলেনি।