ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় এক স্বামী পরিত্যাক্তা অসহায় গৃহবধু (৪৮) কে পালাক্রমে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে ওই নারীর মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ঘর ছাড়া করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রোববার দুপুরে কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভিকটিম। উপজেলার শৌলজালিয়া আবাসনের ৯ নং ঘরে ৩১ মার্চ বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘর নেই, জমিও নেই প্রকল্পের অধীনে শৌলজালিয়া গ্রামে নির্মিত আবাসনে সরকারীভাবে বরাদ্দ পেয়ে ৯নং ঘরে বসবাস করছে স্বামী পরিত্যাক্তা অসহায় গৃহবধু। ঘরে লোক আছে এমন অযুহাতে ৩১ মার্চ বুধবার রাত ২টায় দরজায় নক করে মালেক খলিফার ছেলে মাইদুল খলিফা বলে পরিচয় দেয়। পরিচয় পেয়ে ঘরের দরজা খুললে তারা ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় তার সাথে রফিক নামেও একজনে প্রবেশ করে। রফিক দরজা বন্ধ করে দিয়ে প্রথমে মাইদুল ও পরে রফিক তার ধর্ষণ করে। ডাকচিৎকার দিলে একজনের সময় আরেকজনে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। একথা কাউকে বললে এসব কিছু ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয় এবং ওই সময়ে যাতে কারো কাছে ফোন দিতে না পারে এজন্য ভিকটিমের মোবাইলটিও নিয়ে যায়। পরের দিন (১এপ্রিল) স্থানীয় ইউপি সদস্য শামসুল আলমকে জানালে তিনিও সরেজমিনে জেনে সত্যতা পান। মাইদুল শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান রিপনের ভাই’র ছেলে। ১ এপ্রিল চেয়ারম্যানকেও জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আবাসনের ঘর ছাড়া এমনকি এলাকা ছাড়া করারও হুমকি দেয়। এতে ভয়ে আত্মগোপনে থেকে জানতে পারে ইউএনও ২এপ্রিল আবাসন পরিদর্শন করবেন। তিনি আবাসন পরিদর্শনে গেলে এ সময় তার কাছে মৌখিকভাবে ঘটনার বর্ণনা জানালে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। শনিবার সন্ধ্যায় সরেজমিন আবাসনে গেলে প্রতিবেশিরা জানান, বুধবার রাতে ঘরের মধ্যে চিল্লাচিল্লি ও চেচোমেচি শব্দ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে ভোররাতের ঘটনার কারণে তারা নিজ ঘর থেকে বের হননি বলে জানিয়েছেন। তবে প্রতিবেশীরা এঘটনার নিজ নাম বলতে চাননি। এ ঘটনা মাইদুল ও রফিক আত্মাগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তবে অভিযুক্তরা বিভিন্নভাবে ওই নারীকে হুমিক দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন ওই নারী, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও দাবি করেন। ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান রিপন জানান, মাইদুল আর আমাদের বংশ একই। সে আমাদের ঘণিষ্ট কিছু না। আমি ঘটনাটি গতকাল বিকেলেই (৩ এপ্রিল) শুনেছি। আমার কাছে কেউ কিছু আগে থেকে বলেনি। ভিকটিমও আমার জ্ঞাতী আত্মীয় এবং অসহায় হওয়ায় আমি তাকে ঘর দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগে যেসব বিষয় বলা হয়েছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা জানিয়ে এ ধরনের অপরাধী যেই হোক তার সুষ্ঠ বিচার দাবী করেন তিনি। কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার জানান, অভিযোগ পেয়ে ভিকটিমসহ থানায় পাঠানো হয়েছে। থানাও কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) আইনগত ব্যবস্থা নিবে। কাঠালিয়া থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় জানান, ইএনও মহোদয়ের কাছে দেয়া একটি অভিযোগ তিনিই আমার কাছে ভিকটিমসহ পাঠিয়েছেন। তদন্ত করে পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।