সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী সন্তোষ সাহা বলেছেন, সাতক্ষীরার মানুষকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা বদ্ধপরিকর। গতকাল একান্ত স্বাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরার সাধারণ জনগনের জন্য প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য সরকার যে ভূমিকা গ্রহণ করেছিল তা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা এখন শতভাগ বিদ্যুতায়িত জেলা।
এই বিশাল অংকের গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে আরো আধুনিকায়ন করে গড়ে তুলেছে। সাথে সাথে এক দক্ষ কর্মী বাহিনী সবসময় প্রস্তুত রেখেছে। ইতঃপূর্বে সরকারের সহযোগিতায় আমরা করোনা ও আম্পানের মতো ব্যাপক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। ঝড়ের কবলে পড়ে পল্লী বিদ্যুতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামাদির ব্যাপক ক্ষতি হলেও আমরা দক্ষ কর্মী বাহিনী দিয়ে পুনরায় সেগুলো প্রতিস্থাপনপূর্বক বিদ্যুতের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
ইতিমধ্যে আমরা যেকোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে দূর্যোগে আলোর গেরিলা ও আলোর ফেরীওয়ালা নামে ২টি টিম গঠন করেছি। যেকোন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি এখানে বিগত ০৬-০৩-২০১৯ তারিখে দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমার পূর্বে এই সমিতির আওতায় গ্রাহক ছিল ৩ লক্ষ ৮০ হাজার ৪শ ৮৮ জন। পক্ষান্তরে বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা ৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮শ ৯২ জন। লাইন ছিল ৬ হাজার ৬শ ৩ কিলোমিটার। এখন ৯ হাজার ৪শ ৬২ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। উপকেন্দ্রের ক্ষমতা ছিল ১১২.৫০ এম.ভি.এ (মেগা ভোল্ট এ্যাম্পিয়ার)। এখন উপকেন্দ্রের ক্ষমতা হয়েছে ১৭২.০৫ এম.ভি.এ। সিস্টেম লস ছিল ১৫.৬১। এখন সেটা কমে ১১.২৮ হয়েছে। ইতঃপূর্বে আমাদের জোনাল অফিস ছিল কালীগঞ্জ ও ঝাউডাঙ্গা, মোট ২টি। এখন শ্যামনগর, কলারোয়া ও আশাশুনি সহ মোট ৫টি জোনাল অফিস হয়েছে। পূর্বে আমাদের দেবহাটা ও তালাতে ২টি অভিযোগ কেন্দ্র ছিল। সেগুলোকে এখন সাব-জোনাল অফিসে পরিণত করা হয়েছে। এর আগে আমাদের অভিযোগ কেন্দ্র ছিল ১৩টি এখন আরো ৩টি বেড়ে ১৬টি অভিযোগ কেন্দ্র হয়েছে। প্রথমে আমরা শুধুমাত্র সাতক্ষীরা গ্রীড থেকে বিদ্যুৎ নিতে পারতাম। এখন আমরা বেনাপোল গ্রীড থেকেও বিদ্যুৎ নিচ্ছি। আমাদের ৩৩ কে.ভি ফিডার ছিল ৪টি। এখন আরো ৪টি বেড়ে মোট ৮টি ফিডার হয়েছে। ১১ কে.ভি ফিডার ছিল ৪০ টি। এখন ৫৮টি ১১ কে.ভি ফিডার হয়েছে। বিগত যেকোন সময়ের চেয়ে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বর্তমান অনেক আধুনিক ও গতিশীল। সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে আরো বেগবান ও সমৃদ্ধ করার জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।