নোয়াখালীর সেনবাগে নিখোঁজের ৪দিন পর উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের তেলি পুকুর পাড় এলাকার একটি খাল পাড়ের মাটিতে পোঁতা অবস্থায় মোঃ মিজানুর রহমান প্রকাশ আশ্রাফুল নামের (৬) বছরের এক শিশুর অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করেছে সেনবাগ থানা পুলিশ। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নিহত আশ্রাফুলের মা হাজরা খাতুনের সাবেক স্বামী ঘাতক মোঃ আলা উদ্দিনকে সোমবার রাতেই নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আশ্রাফুলকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে ওই স্থানে পুঁতে রাখে বলে পুলিশের নিকট স্বীকার করেছে। এ সময় পুলিশ বাদশা নামের আরো একজনকে জিজ্ঞাবাদ করার জন্য আটক করেছে। গ্রেফতারকৃত আলা উদ্দিন নজরপুর গ্রামের জিতু সওদাগর বাড়ির মৃত মমতাজ মিয়ার ছেলে ও নিহত আশ্রাফুলের মায়ের সাবেক স্বামী এবং আটক অপরজন হচ্ছে নজরপুর ৫নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) নুরবীর ছেলে বাদশা। আলাউদ্দিনকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেওয়ার জন্য নোয়াখালীর বিচারিক আদালতের প্রেরণ করা হয়েছে।
এঘটনায় নিহতের পিতা আবুল কাশেম মীর বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে আসামি করে সেনবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং-৪ তারিখ ৬/৪/২০২১ইং। আশ্রাফুলের বাড়ি সেনবাগ উপজেলার ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের বাবুপুর-শ্রীপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের সেকান্তর মীর বাড়ির রাজ মিস্ত্রী আবুল কাশেম মীরের ছেলে। আশ্রাফুল নানার বাড়ি কাদরা ইউনিয়নের নজরপুর জিতু সওদাগ বাড়ির নানা ছায়েদুল হকের ঘরে থেকে পড়ালেখা করতো।
গত শুক্রবার ২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টারদিকে আশ্রাফুল নানার বাড়ি থেকে তেলি পুকুর পাড় এলাকায় এসে নিখোঁজ হয়। পরবর্তীতে বহু খোঁজাখুজি করে এবং মাইকে প্রচারনা চালিয়েও তার কোন সন্ধান না পেয়ে রাতেই সেনবাগ থানায় নিখোঁজ ডাইরি করে।
এরপর সোমবার (৫এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই এলাকার আবদুল হামিদ তার ইরি-বোরো ধান খেত দেখতে গিয়ে খালের পাড়ে মাটিতে পোতা অবস্থায় আশ্রাফুল মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
পরে খবর শুক্রবার রাত ৮টারদিকে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ-সার্কেল) মোঃ শাহ এমরান, সেনবাগ থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় সেনবাগ থানার এসআই মোঃ সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স শিশুর লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সকালে নোয়াখালী জেনালের হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
সেনবাগ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ(ওসি)আবদুল বাতেন মৃধা শিশুর লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জানায় শিশু আশ্রাফুলের মা হাজরা খাতুনের সাবেক স্বামী মোঃ আলোউদ্দিনের সঙ্গে বিরোধের জেরে সে শিশুটিকে একাপেয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশটি ওই স্থানে পুঁতে রাখে। এ ঘটনায় তারা দুইজনকে আটক করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশ্রাফুলের মায়ের সাবেক স্বামী আলাউদ্দিন ঘটনার সঙ্গে জড়ির মর্মে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তাকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য দুপুরে নোয়াখালীর বিচারিক আদালতে প্রেরণ করা হয়।