করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসন সরকারের প্রদত্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। স¦াস্থ্য রক্ষায়, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নিলেও সংক্রমণরোধে জনস্বার্থে নেওয়া এসব সচেনতনতার কার্যক্রম মানছে না প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষ। যত্রতত্র গ্রামগঞ্জের মানুষের সাথে উৎসবমুখর পরিবেশে মেলামেশার ফলে এ জনগোষ্ঠীর বড় ধরণের সংক্রমণসহ প্রাণনাশের আশঙ্কাও রয়েছে। জানা যায়, গত ৫ই এপ্রিল সোমবার সরকারের নির্দেশনায় সাধারণ ছুটি থাকায় বিভিন্ন্ জেলার স্থানীয়রা বাড়িতে এসে এখানকার গ্রাম্য হাট-বাজারগুলোতে যেন উৎসব মূখর হয়ে উঠেছে। চায়ের দোকানে চলছে টিভি, সংবাদ ও বিভিন্ন সিনেমা দেখার পর্ব চলছে অনায়াসে। বিকেল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত চায়ের দোকানে জমিয়ে চলছে আড্ডা দিচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশা জীবি মানুষসহ শহরফেরত মানুষেরা। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ করোনা ভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রচার-প্রচারনা চালালেও গ্রামের মানুষ তা কর্ণপাত করছেন না। সকালে স্থানীয় হাঁট-বাজারের এসব দোকানগুলোতে লোকজন কিছুটা কম হলেও বিকেলে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ প্রশাসন ও পুলিশের টহলের খবর রাখে, আবার কেউ দোকানের অর্ধেক শাটার খোলা রেখে কৌশলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায় পৌরসভার গুদড়ী বাজার, রংপুরিয়া র্র্মাকেট, আমজুয়ান বাজার, বাকশার হাটে বিভিন্ন দোকানগুলোর সামনে মানুষের ভিড়। এ যেন মহা আনন্দ করতে শহর থেকে গ্রামে ছুটে এসেছেন লোকজন। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনামতে ফার্মেসি ও কাঁচাবাজার ছাড়া সকল দোকান বন্ধ থাকার কথা থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী নিয়ে অনেকেই এসেছেন হাটে। সকাল থেকেই শুরু রয়েছে জনসমাগম। অনেকেই ব্যবহার করছেন না মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বড় ধরনের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজারে জনসমাগম ঘটছে প্রতিনিয়ত।
শহরের চা দোকানদার মামুন ভারাক্রান্ত কন্ঠে বলেন, স্যার হুনছি করোনা ভাইরাসে সবারে মারতেছে কিন্তু আমার প্রতিবন্ধি সন্তান অন্যদিকে মায়ের কিডনিতে টিউমার ঔষধের টাকা ও খাওন যোগাতে ছোট একটি চায়ের দোকানে চা বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়। প্রশাসনের ভয়ে দোকান খুললেও ক্রেতারা আসছে না দোকানে।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবাল বলেন, পুলিশ সব সময় বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জনসমাগমের খবর পাওয়া মাত্রই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
পৌরসভার নগর পিতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন-শহরের অনেক দোকানদার আমাকে বলে- দোকানপাট বন্ধ থাকায় আমরা আয় রোজকার হীন হয়ে পড়েছি, এখন আমাদের ত্রান সামগ্রী ছাড়া আর কোনই উপায় নাই, আমাদের এই ক্রান্তি লগ্নে পাশে থেকে সাহায্য করবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন স্টিভ বলেন, প্রত্যেক দিন বিভিন্ন এলাকা মনিটরিং করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পৌর শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকায় করোনা মোকাবলায় বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কেউ নির্দেশনা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।