রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সানেরহাট ইউনিয়নের কে. জে ইসলাম বালিকা স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দুর্নীতি,অনিয়ম,সম্পদ আত্মসাৎ ও সভাপতির স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়। প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার শানেরহাটে কে. জে ইসলাম বালিকা স্কুল ও কলেজটির অধ্যক্ষ আবু তাহের মোঃ আখতারুজ্জামান স্বেচ্ছারিতায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিলেন। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক শৃংখলা না থাকায় শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা রক্ষায় গভর্নিং বডির সাবেক ও বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ, অভিভাবক ও এলাকাবাসী গত বছরের নভেম্বরে কলেজ ক্যাম্পাসে গণ মিটিং করে। ওই মিটিংয়ে অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। তন্মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি আত্মসাত, কলেজ পর্যায়ে ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে উৎকোচ গ্রহন ও এমপিওভুক্তির নামে ১৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া, প্রতিষ্ঠানটির মসজিদের ইট বিক্রি, সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত, মোটা অংকের টাকা নিয়েও নিয়োগ না দেয়া, আয়-ব্যয়ের হিসাব না রাখা,ক্যাম্পাসের মুল্যবান গাছ কর্তনসহ অসংখ্য অভিযোগ উল্লেখযোগ্য। অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে অভিভাবক মতিয়ার রহমান মন্ডল কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে গত বছরের অক্টোবর মাসে লিখিত অভিযোগ করেন। পাশাপাশি ওই অধ্যক্ষ ২০১২ সালের ১ জুলাই প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষায় সাচিবিক বিদ্যা ও অফিস ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ১ম নির্বাচিত ফজিলাতুন নেছার নাম রেজ্যুলেশন খাতায় ‘ফ্লুইড কালি’ দিয়ে মুছে শাহানাজ পারভীনের নাম অন্তর্ভুক্তকরণ, এন.টি.আর.সি.এ থেকে ৩ শিক্ষকের নিয়োগ দেয়া হলেও সেস্থলে ৪ জন শিক্ষকের নামও অন্তর্ভুক্ত করেন। এ ছাড়াও অধ্যক্ষ ছুটি না নিয়ে একাধিকবার ভারতে গমন, দিনের পর দিন প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিতসহ গভর্নিং বডির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নানাবিধ অপকর্ম করারও অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগগুলো প্রমানিত হলে পরের মাসের ২১ নভেম্বর অধ্যক্ষ আবু তাহের মোঃ আখতারুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্তসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামান বলেন,এমপিওভুক্তিতে টাকা লাগে,তাই কিছু টাকা নিয়েছি। দীর্ঘদিন চাকরী করলে ভুল ভ্রান্তি হবেই। এছাড়াও আনীত অন্যান্য অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। অভিযোগগুলো খন্ডাতে গত ২ ডিসেম্বর জবাব দিয়েছি। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির সভাপতি কাজী জওয়াহেরুল ইসলাম (কে. জে ইসলাম) বলেন, এলাকায় নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে ১৯৯৫ সালে কে. জে ইসলাম বালিকা স্কুল ও কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। আমার সরলতার সুযোগে সে (অধ্যক্ষ) আমার স্বাক্ষর জাল করাসহ নানামুখী অনিয়ম-দূর্নীতির কারণে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠায় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও করোনার সময়ে ১৬টি মুল্যবান গাছ কর্তন করায় ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ তদন্তে ৫ সদস্যের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইউএনও বিরোদা রানী রায় বলেন, গাছ কর্তনের অভিযোগ পেয়ে উপজেলা বন সংক্ষণ কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বণ সংরক্ষন কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান বলেন-আমি তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছি।