‘চরাঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনে খাপ খাওয়ানোর কৌশল’ নিয়ে ‘ফ্রেন্ডশিপ’ স্কুলের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময় শুরু করেছে ফ্রান্সের কয়েকটি স্কুল। কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুদূর ফ্রান্স থেকে ১১এপ্রিল রোববার অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন সে দেশের স্কুলগুলোর প্রতিনিধি। মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে জলবায়ু পরিবর্তনে টিকে থাকার কৌশল রপ্ত করাতে এ বিশেষ কর্মসূচি শুরু করেছে উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’।
অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মসূচীর অনলাইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ‘জিয়ন মেরিন স্কুহ’। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত ফ্রেন্ডশিপ স্কুল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কৌশল জানার সুযোগ হয়েছে ফ্রান্সের ৮টি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর কৌশল-জ্ঞান উন্নত বিশে^ ছড়িয়ে পড়বে বলেও আশা করেন তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক রুনা খান জানান, যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের প্রত্যন্ত চর জনগোষ্ঠির কল্যাণে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে ফ্রেন্ডশিপ। এ সংস্থার উদ্যোগে অনেক আগ থেকেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ মৌলিক নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে বিশেষ কর্মসূচি চলমান। ব্যতিক্রমি নতুন এ উদ্যোগে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের সফলতা আরও ভালভাবে জানতে পারবে ইউরোপের দেশগুলো।
কুড়িগ্রাম-গাইবান্ধা জেলার অধীনে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র চরাঞ্চলে ফ্রেন্ডশিপ প্রতিষ্ঠিত স্কুলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কৌশল তুলে ধরেন ফ্রেন্ডশিপ শিক্ষা বিভাগের প্রধান ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) ইলিয়াস ইফতেখার রসুল। জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে আন্তঃস্কুল সমন্বয় সম্পর্কে ফ্রেন্ডশিপ শিক্ষা বিভাগের টীম লীডার রেজা আহমেদ জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ে ৭ স্কুলের পাঁচ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রপ্ত করেছে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কৌশল-জ্ঞান। নিয়মিত শিক্ষার পাশাপাশি ফ্রেন্ডশিপ স্কুল থেকে পাওয়া নৈতিক এবং অন্যান্য শিক্ষা জ্ঞান পরিবারে-সমাজে ছড়িয়ে দিচ্ছে এসব শিক্ষার্থী, যার সুফল পেতে শুরু করেছেন প্রত্যন্ত চরের বাসিন্দারা। আগামীতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এমন উদ্যোগের আওতায় চরের সব শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসার কথাও জানান ফ্রেন্ডশিপ শিক্ষা বিভাগের এই কর্মকর্তা।
অভিজ্ঞতা বিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেন, ফ্রেন্ডশিপ ফ্রান্সের চেয়ার উইলিয়াম লেবেডেল, ফ্রান্সের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জিয়ন মিশেল ব্লানকুয়ের-সহ ফ্রান্সের স্কুলগুলোর প্রতিনিধি এবং ফেন্ডশিপ কর্মকর্তরা। জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে ফ্রেন্ডশিপের এ উদ্যোগ বাংলাদেশের অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকি এলাকায় ছড়িয়ে দেয়ার কথা জানান বক্তারা।
বাংলাদেশের যেখানে জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে, সে সব প্রান্তিক এলাকার জনগোষ্ঠিকে স্বাবলম্বী করণ এবং স্থানীয় জনগনের ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছে উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’। ২০০২ সালে যাত্রা শুরু পর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিবছর ৬০ লাখ মানুষকে সহযোগিতা করে আসছে সংস্থাটি। দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকার পাশাপাশি যেখানকার বাসিন্দারা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার এমন জনগোষ্ঠিকে স্বাবলম্বী করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফ্রেন্ডশিপ। এক্ষেত্রে দেশে এবং দেশের বাইরে সফলতার মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ফ্রেন্ডশিপ।