পরিবেশ আইন অমান্য করে কৃষি জমির (টপসয়েল) ও পুকুর খননের মাটি কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটায়। এতে কথিপয় প্রভাবশালীরা লাভবান হলেও হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। আবার এই মাটি ট্রাকে পরিবহন করায় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সদ্য নির্মিত পাকা রাস্তা ভেঙ্গেচুড়ে একাকার হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষি জমির মাটি কাটা দ-নীয় অপরাধ। আর জমির শ্রেণি পরিবর্তন না করে পুকুর খনন করাও দ-নীয় অপরাধ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ বলেন, জমি ও ইটভাটার মালিকরা পরিবেশ আইন ও ভুমি নীতিমাল লঙ্ঘন করছেন। মাটি কাটার ফলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। এর আগে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো ও ইটের সাইজ ছোট করায় ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, পরিবেশ আইন অনুয়ায়ী কৃষি জমির মাটিকাটা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। অন্য দিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রন আইন অনুযায়ী কৃষিজমির টপসয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের অর্থ জরিমানা ও দ্ইু বছরের কারাদ- দেওয়ার বিধান রয়েছে। আবার একই কাজ দ্বিতীয় বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদ- হবে। এজন্য কাজের সাথে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের সমান শাস্তির বিধান রয়েছে। উপজেলার মাড়িয়া, শিবজাইট, তালতলি, যোগিপাড়া, মাধনাগর, সাইধাড়া, বাইগাছা মোহনগঞ্জ এলাকায় কৃষি জমির মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটায়।
আবার খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক ভর্তি করে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ভাবে কাঁকড়া নামীয় এসব ট্রাকের অবাধ চলাচলের কারণে উপজেলা সদ্য নির্মিত রাস্তাগুলো ভেঙ্গেচুড়ে একাকার হয়ে গেছে। এ ছাড়া ওই সব ট্রাক থেকে মাটি পড়ে ধুলোবালির স্তুপ জমে যাওয়ায় ওই সব রাস্তা দিয়ে যানচলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেন, এই সমস্যাটি বাগমারায় চরম আকার ধারন করেছে। বিষয়টি উপজেলা সমন্ময় কমিটির সভায় তুলে ধরে একটি রেজুলেশন করা হলেও বাস্তবে কোন কাজ হচ্ছে না। এ বিষয়ে ভাঁটা মালিক জাফর মাস্টারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পুরাতন একটি ভাঁটা কিনেছি। সেখানে আশপাশে থেকে মাটি এনে ইট তৈরি করি। পিকেবি ইটভাটার মালিক উপাধ্যক্ষ আলহাজ¦ আবদুস সোবহান অবৈধ এসব মাটি ভর্তি ট্রাকের অবাধ চলাচলের কারণে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি সাধনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, একক ভাবে শুধু ইটভাটা নয় এর সাথে আরো অন্যান্য পক্ষ জড়িত। তাদের কারণেও রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে বাগমারা ইটভাটার মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ¦ জাহাঙ্গীর আলম হেলাল বলেন, ওই সব ট্রাকে মাটি বহনের কোন বৈধতা নেই। তারা ট্রাকে ওভারলোড মাটি তুলে রাস্তা ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করে চলেছে। আমরাও চাই এসব অবৈধ যানবাহন বন্ধ হোক। যাতে রাস্তাঘাট নিরাপদ থাকে।