গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের চরনীলক্ষী গ্রামের কৃতী সন্তান, চরনীলক্ষী নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা সহ এলাকায় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পিডিবির অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আলহাজ¦ মোশাররফ হোসেন মোল্লা আর নেই। তিনি গত ১৪ এপ্রিল বুধবার সকালে গাজীপুরের হক্কানি হাউজিং সোসাইটির নিজ বাসায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাইহির রাজিউন) মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে, ১ মেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সকাল ১১ টায় গাজীপুরের হক্কানি হাউজিং সোসাইটির জামে মসজিদ চত্বরে তাঁর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
হক্কানি হাউজিং সোসাইটি জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। জানাজার পূর্বে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বক্তব্য রাখেন কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ¦ অ্যাডভোকেট মোঃ আমানত হোসেন খান, মরহুমের চাচাশ্বশুর টঙ্গী শহীদ আহসানউল্লাহ্ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডাঃ কমরউদ্দীন, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন হযরত মাওলানা মোঃ আবু তাহের দেওয়ানী, রাণী বিলাসমনি সরকারী বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা মতিউর রহমান খান, হক্কানি হাউজিং সোসাইটি জামে মসজিদের সেক্রেটারি জামাল উদ্দীন, মরহুমের মেয়ের জামাতা ত্রিশাল সদর হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ মাহির আন্জুম, ছোট ভাই কামাল হোসেন মোল্লা, মরহুমের ছোট ভায়রা ভাই অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটন প্রমূখ। মরহুমের প্রথম জানাজা নামাজে ইমামতি করেন হক্কানি হাউজিং সোসাইটি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা বেলাল আহমেদ।
পরে বিকাল ৩ টায় কাপাসিয়ার চরনীলক্ষী গ্রামে তাঁর নিজ হাতে গড়া চরনীলক্ষী নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আশপাশের গ্রামের শতশত মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজার পূর্বে মরহুমের জন্য দোয়া চেয়ে স্মৃতিচারণ করেন, সনমানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন মাষ্টার, সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা সিরাজ উদ্দিন বিএসসি, পাঁচকান্দি ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন, চরনীলক্ষী নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক মাওলানা নূর মোহাম্মদ, মাওলানা এনামুল হক, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন, মাষ্টার ফখরুদ্দিন মৃধা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রেটারি আবদুল হক, মরহুমের বন্ধু ডাঃ শফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম মাষ্টার, ভাতিজা ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর কবির মোল্লা, মরহুমের ছোট ভায়রা বিশিষ্ট সাংবাদিক অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটন, মেয়ের জামাতা ডাঃ মাহির আন্জুম, ছোট ভাই কামাল হোসেন মোল্লা। দ্বিতীয় জানাজার নামাজে ইমামতি করেন মরহুমের নিকটাত্মীয় মুফতি মাওলানা সাইদুর রহমান রিমন। জানাজা শেষে মাদ্রাসা সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
মরহুম ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ছিলেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষের অতি আপনজন। তিনি নিজ এলাকায় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। নিকটাত্মীয় চিকিৎসকদের নিয়ে ওই মাদ্রাসা মাঠে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সময় চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করেন। সততা ও আদর্শিক জীবন যাপনের পাশাপাশি বিভিন্নভাবে আত্মীয়স্বজন ও এলাকার সাধারণ মানুষের সেবার মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সকলের কাছের মানুষ ও পরমাত্মীয়। তাঁর স্ত্রী মনিরাতুল আলম গাজীপুর সরকারি রাণী বিলাস মনি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক। পাকবাঘিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আবদুল মোতালিব মাষ্টার তাঁর শশুর। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।