নওগাঁর মহাদেবপুরে বুধবার ও বৃহস্পতিবার কঠোর লকডাউন পালিত হয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে স্থানীয় প্রশাসন ছিল কঠোর অবস্থানে। এ সময় থানা পুলিশ নাশকতার আশংকায় এক যুবককে আটক করেছে।
লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই উপজেলা প্রশাসন সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ (লকডাউন) বাস্তবায়নের জন্য মাঠে নামে। বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আসমা খাতুন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যারা দোকান খোলা রাখে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানার আদেশ দেন। তিনি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৫৬ এর ১২ ধারা এবং দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ও ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ১২টি মামলায় মোট তিন হাজার ২৫০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
থানা পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে দিনরাত পাহারার ব্যবস্থা করে। যারা অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। অপ্রয়োজনে মটরসাইকেল নিয়ে বাইরে আসায় ১৪ টি মামলা দায়ের করা হয়। বুধবার বিকেল ৩ টায় মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ডে মটরসাইকেল আটক করার পর তানভির হুসাইন (২৭) নামে এক যুবক ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে পুলিশের কার্যক্রম দেখানোর সময় জানতে পেরে থানা পুলিশ তাকে আটক করে। লাইফে সে মন্তব্য করে যে, পুলিশ হেলমেট না থাকার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও পুলিশের নিজেরই হেলমেট নেই। কিন্তু মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, থানা পুলিশের প্রত্যেকের মটরসাইকেলের সাথে হেলমেট রয়েছে। গাড়ি চালানোর সময় সেগুলো সবাই ব্যবহার করেন। আটক যুবক উপজেলা সদরের বাগানবাড়ি মহল্লার মজিবর রহমানের ছেলে। সে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সদস্য হিসেবে এর আগে আটক হয়েছিল বলে পুলিশ জানায়। বৃহস্পতিবার তাকে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫১ ধারায় নওগাঁ কোর্টে চালান দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার থানা পুলিশ আরো ১৬ টি মটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মিজানুর রহমান মিলন উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে যারা পথচারীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান হাবীব ভোদন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায়, মহাদেবপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালামসহ পুলিশের একটি চৌকষ দল, সাংবাদিক কাজী সামসুজ্জোহা মিলন, সাংবাদিক বরুণ মজুমদার প্রমুখ তার সঙ্গে ছিলেন।
এসময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দোকান খুলে রাখা, যানবাহন চালানো প্রভৃতি অপরাধে ইউএনও দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ও ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ৬টি মামলায় মোট এক হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।