নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাংলাদেশ আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরে এমপির গ্রামের বাড়িতে সন্ত্রাসীরা ফের ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটায়। এ সময় ৩টি অবিষ্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
জানা যায়, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত সেতুমন্ত্রীর ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটায়। এ সময় বাড়ির লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এঘটনায় রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মাদক স¤্রাট হাসান ইমাম রাসেল (৪৫), বসুরহাট সরকারী মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন রিয়াদ (২৭), বসুরহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওহিদ উল্যাহ দিদার (৩০)। ইতি পূর্বে সেতুমন্ত্রীর বাড়িতে তার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৬বার বোমা হামলা ঘটেছে।
এ বিষয়ে বাড়িতে থাকা সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন বলেন, মাদক স¤্রাট হাসান ইমাম রাসেলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বিকেল থেকে আমাদের বাড়ির আঁশ পাশে মহড়া দিচ্ছে, এরা রাতে ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি ৩জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার রাতে সেতুমন্ত্রীর ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণের সময় হাসান ইমাম রাসেলসহ অন্য সন্ত্রাসীদের ঘটনাস্থলে দেখা গেছে বলে সেতুমন্ত্রীর ছোট ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত ৩জনের মধ্যে হাসান ইমাম রাসেল ও ওহিদ উল্যাহ দিদার বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বসুরহাট পৌরসভায় আক্রমণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরকসহ দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মেয়র আবদুল কাদের মির্জা রাসেলের মাদক ব্যবসা ও অনিয়মের ব্যাপারে কথা বলায় তিনি ফেসবুক লাইভে মেয়রকে নানা ধরণের হুমকি দিয়ে মন্তব্য করে আসছিলেন। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাত ১১ টায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বাড়িতে রাসেলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়। রাব-১১ কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টহল দিচ্ছে।
শনিবার দুপুর ১২টায় নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য এই মাদক স¤্রাট হাসান ইমাম রাসেল কোম্পানীগঞ্জে প্রধান মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ও সে একজন ইয়াবা বধি সেন্ডিকেটের মূল সদস্য। বৃহত্তর নোয়াখালীর বিভিন্ন শহরে, হাট বাজারে, অলি,গলিতে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
২০১৪ সালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুজ্জামান বসুরহাট মেইন রোডের ভাই ভাই ম্যানশন থেকে রাসেলকে ১কেজি গাজাসহ আটক করে এবং তাকে ১বছরের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন। ২০১৮ সালে নোয়াখালী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রোকনুজ্জামানের নেতৃত্বে ট্রাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ফেন্সিডিল উদ্ধার করে। পরে নোয়াখালীর মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক ইমরুল চৌধুরী কায়েসবাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। গত ০৭ এপ্রিল বসুরহাট পৌরসভা ৮নং ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বাদী হয়ে রাসেলের বিরুদ্ধে বিষ্ফোরক আইনে মামলা করেন।