তিন বেলা খাওয়ার জন্য নিজের ঘরে চাল-ডাল থাকে না। তারপরও পরিবারের কথা না ভেবে এনজিও থেকে ঋণের টাকায় কেনা চাল-ডাল, সবজি, তৈল, মাছসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কঠোর লকডাউনে বিপর্যস্ত অসহায় মানুষের বাড়িতে পৌছে যাচ্ছেন কাউন্সিলর বাবুল আকতার। গত রোববার থেকে তিনি নিজ উদ্যোগে এ খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছেন।
বাবুল আকতার যশোরের মণিরামপুর পৌর সভার ৮নং ওয়ার্ড (কামালপুর ও মোহনপুর গ্রামের আংশিক) নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং স্বেচ্ছাবেকলীগ পৌর শাখার সাধারন সম্পাদক। গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নানা ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সেদিন ফলাফল ঘোষনায় বিলম্ব হওয়ায় ওই রাতে গ্রামের কয়েক’শ নারী-পুরুষ ভোট কেন্দ্র ঘিরে রাখে বাবলুর জন্য। এক পর্যায় রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করতে বাধ্য হন কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার।
সরকারি সহায়তার অপেক্ষায় না থেকে কঠোর লকডাউনে দূর্বিসহ হয়ে ওঠা মানুষের জীবন-জীবিকার কথা মাথায় নিয়ে ঋণের টাকায় কেনা চাল, ডাল, মাছ, তৈল, আটা, ছোলা সবজিসহ ১৪ রকমের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে অসহায় মানুষের বাড়িতে পৌছে দিচ্ছেন কাউন্সিলল বাবুল আকতার ওরফে পাগলা বাবুল। শুধু এবারই প্রথম নয় প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ যে কোন বিপদে ওয়ার্ডের অসহায় মানুষের পাশে সবার আগেই পৌছে যান বাবুল আকতার। এর প্রতিদানও পেয়েছেন কাউন্সিলর বাবুল আকতার। গেলো নির্বাচনে ওয়ার্ডের আপামর জনসাধারনের ভালবাসায় ফের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
কাউন্সিলর বাবুল আকতার সহধর্মিনী জাকিয়া বেগম বলেন, উনি (বাবুল) গ্রাম নিয়েই পড়ে আছেন, কি করলি মানুষের ভাল হবে এই হলো তার ধ্যানজ্ঞান। সন্তানরা তিনবেলা কি খাবে তার খোজঁখবর রাখে না। গত সপ্তাহে আদ্ব-দ্বীন সমিতি থেকে দেড় লাখ টাকা ঋণ তুলে আবার গ্রামের মানুষের জন্যে খাবার কিনেছে। গত বছর লকডাউনের সময় অনুরুপভাবে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছিল।
বাবলুর বৃদ্ধা মা আশুরা বেগম বলেন, ছেলের এমন কর্মকা-ে প্রথম দিকে খারাপ লাগত, কিন্তু গ্রামের মানুষ বাবলুরে ভাল বলে বিধায় তার বাবলুকে নিয়ে এখন গর্ভ হয়। বয়োবৃদ্ধা হালিমা বেগম বলেন, বাবুল আমাগের জন্যি যা করে তা নিজের ছেলে-পুলেও করে না। আলেয়া বেগম নামের অপর এক বয়োবৃদ্ধা বলেন, রোগে চলার জো-নেই, তাই কয়দিন আগে বাবলু নিজিই ভাতার টাহা তুলে আনে আমাগে খাদ্য দেচ্ছে।
কাউন্সিলর বাবুল আকতার বলেন, গেলো নির্বাচনে গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে আমাকে ৩ লাখ ২৬ হাজার টাকা দেয়। নির্বাচনে সব টাকা খরচ হয়নি। ওইখান থেকে বেচে থাকা টাকা এবং ঋনের টাকায় কেনা এসব পণ্য সামগ্রি ২৬০ পরিবারের মাঝে পৌছে দেয়ার চেষ্টা করছি মাত্র।