কৃষি নির্ভর উত্তরের নীলফামারী জেলার বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। ওই সমারোহ দেখে রঙ্গিন হয়ে উঠেছে প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। রঙিন স্বপ্নে বিভোর কৃষাণ কৃষাণী। এ যেন সোনালী স্বপ্নের ছড়াছড়ি। নতুন ধানের আগমনী বার্তা কৃষকের পরিবারে এনেছে আনন্দের ঢেউ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোন বিপর্যয় না ঘটলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় উথলে উঠবে হাজারো কৃষক পরিবারের মন। দৃষ্টিসীমা ছাপিয়ে মাঠে মাঠে সবুজ সমারোহে বৈশাখের পূর্বালী বাতাসে সোনালী ধানের শীষ হাওয়ায় দুলছে। আর এ দোলায় লুকিয়ে আছে কৃষক পরিবারের রঙ্গিন স্বপ্ন। ধানের গাছগুলো সবুজের আভা কেটে হলুদ বরণ ধারণ করতে শুরু করছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা বলছেন, ধানের চারা রোপণ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। এ কারণে ধানক্ষেতে রোগ-বালাই ছিল কম, ধান কাটা পর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
উপজেলার সদর ইউপি’র রাজিব গ্রামের মোবারক হোসেন,গাড়াগ্রামের জোনাব আলী, নিতাই ইউপি’র ছালামসহ আরো অনেকে জানান, ধানের চারা রোপণের পর থেকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। সেচে কোনো রকম বিঘœ ঘটেনি। মেঘলা আবহাওয়া বিরাজ না করায় ক্ষেতে মাজরা পোকাসহ অন্যান্য রোগের প্রকোপ অনেকটা কম। পঁচন ও নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ নেই বললেই চলে। এজন্য জমিতে দফায় দফায় কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়নি। কৃষকরা আরও বলেন, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আগাম রোপণকৃত ধান কয়েকদিনের মধ্যে কাটা মাড়াই শুরু হবে। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক নদীর জলিতে রোপনকৃত ধান স্বল্পপরিসরে কাটামাড়াই শুরু করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে ১১ হাজার ১শ ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষক পর্যায় হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ প্রদান করায় গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। চারা রোপনের শুরু থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তাগণ কৃষক পর্যায়ে নানা ধরণের পরামর্শ দিয়ে আসছেন। কৃষকের ঘরে ধান তোলা পর্যন্ত এ সেবা অব্যাহত থাকবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ না হলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা করা হয়।