নীলফামারী থেকে ২০ হাজার ধানকাটা শ্রমিক কাজের সন্ধানে যাচ্ছেন দক্ষিণের জেলাগুলোয়। কঠোর লকডাউনে যানবাহন বন্ধ থাকায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যায়ক্রমে এসব শ্রমিকদের মাইক্রোবাসে করে পাঠানো হচ্ছে তাদের গন্তব্যে। জানা যায় ১৮ এপ্রিল থেকে ধানকাটা শ্রমিক পাঠানো শুরু হয়েছে।
ধানকাটা মৌসুমের এ সময় নাটোর, নওগাঁ, সান্তাহার, পাবনা, নোয়াখালী, জয়পুরহাট, রাজশাহী, ঈশ্বরদীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধান পেকেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কায় কৃষকরা দ্রুত ধানকাটা ও মাড়াই করে ঘরে তোলার প্রস্ততি নিচ্ছেন। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউন পরিস্থিতিতে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুর উপজেলা থেকে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক ধানকাটার জন্য পাঠানো হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ এসব শ্রমিকদের পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।
সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন ও কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম জানান, ধানকাটা শ্রমিকদের কাছে মোবাইলফোনে এসএমএস আসছে কোথায় কোথায় ধানকাটা শ্রমিক লাগবে। কারণ ওইসব এলাকায় এর আগেও গিয়েছিল তারা। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মাইক্রোবাস ঠিক করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের পাঠানো হচ্ছে। দুই দফায় সৈয়দপুর থেকে ৪৪ জনকে পাবনা ও নাটোরে পাঠানো হয়েছে। ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজার রহমান জানান, ইউনিয়ন পরিষদের তালিকা ও উপজেলা প্রশাসনের সুপারিশপত্র নিয়ে যেসব কৃষি শ্রমিকরা আসছেন, তাদের নিরাপদে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে। ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা শবনম জানান, এবারে প্রায় ১০ হাজারের মতো কৃষি শ্রমিক দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান কাটতে যাবেন। কোনো হয়রানি ছাড়াই কৃষি শ্রমিকদের নিরাপদে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার ধানকাটা শ্রমিক বেলাল হোসেন, বারাকাত, ফজলে হোসেন জানান, প্রতি বছর এ সময় ধানকাটার জন্য ট্রেন ও বাসে চড়ে গন্তব্যে যেতেন আর কিছু পয়সা উপর্জন করে বাড়ি ফিরতেন তারা। কিন্তু গত বছর থেকে করোনার কারণে সব শেষ হয়ে গেছে তাদের। এলাকায় তেমন কাজও নেই। তাই চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ধরে ধানকাটার জন্য দক্ষিণের জেলায় যাচ্ছেন।
সৈয়দপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ ওসি আবুল হাসনাত খান জানান, আমরা দুই দফায় ৪৪ জনকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠায়েছি। আগামীতে আরো শ্রমিক পাঠানো হবে।