গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানার বাড়ি থেকে জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর ঘটনার বিচার দাবীতে ফুঁসে উঠেছে গাইবান্ধাবাসী। বৃহষ্পতিবার দুপুরে জেলা জাসদ কার্যালয়ে ‘হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ’ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে আন্দোলন সংগঠিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত করে।
‘হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ’র আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, এই হত্যাকান্ডের সাথে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশেরই তদন্তে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (তদন্ত) মজিবর রহমান ও উপসহকারী-পরিদর্শক (এএসআই) মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসাথে সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে পত্র দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। কিন্তু ওসি মাহফুজারকে তার পদে বহাল রেখে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার সম্ভব নয় বলে বক্তারা মত প্রকাশ করেন। বক্তারা বলেন, পুলিশসহ জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করতে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে মত বিনিময় করা হচ্ছে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল হক রাজা, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি গাইবান্ধা শাখারা সভাপতি মিহির ঘোষ, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউন্নবী রাজু, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর কবির তনু, সাংবাদিক গোবিন্দ লাল দাশ, গৌতমাশিস গুহ সরকার প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, পাওনা টাকার জন্য গত ৫ মার্চ দাদন ব্যবসায়ী জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে অপহরণ করে নিজ বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন করে। এ ঘটনায় হাসানের স্ত্রী বিথী বেগম সদর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ মাসুদের বাসা থেকে হাসানকে উদ্ধার করে থানায় নেয়। কিন্তু থানা থেকে আবারও হাসানকে অপহরণকারী মাসুদের জিম্মায় দেয় পুলিশ। এক মাসের বেশি সময় সেই মাসুদের বাড়িতে আটক থাকেন হাসান। গত ১০ এপ্রিল শনিবার সেই বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মাসুদকে ওই দিনই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। নিহত হাসানের স্ত্রী বাদি হয়ে দুই পুলিশের বিরুদ্ধে গাফলতির অভিযোগ এনে মাসুদসহ তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।