এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় হাওর থেকে ভৈরবের মোকামে ধান আসতে শুরু করেছে। দেশের বৃহৎ ধানের মোকাম ভৈরবে ধান আমদানি হলেও ক্রেতা না থাকায় বিপাকে ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা। হাওর থেকে ধান এনে বিক্রি করতে না পারায় খোলা আকাশের নীচে লক্ষাধিক মণ ধান মজুদ পড়ে থাকায় দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা। ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের দাবি সরকার যেন চলতি বছর ধানের দর র্নিধারন করে দেয়।
বন্দরনগরী ভৈরব বাজার প্রাচীনকাল থেকেই দেশের অন্যতম বৃহৎ ধানের মোকাম হিসেবে পরিচিত। ধানের এ মোকামটি মূলত হাওর অঞ্চল নির্ভর। প্রতিবছর এ সময়ে প্রতিদিন হাওর অঞ্চলের সুনামগঞ্জ,হবিগঞ্জ,কিশোরগঞ্জ,নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জ ব্র্যাক্ষণ-বাড়িয়া থেকে নদী পথে এ মোকামে হাজার হাজার মণ ধান আমদানি হয়।
দেশের বিভিন্নঅঞ্চল থেকে পাইকার ও বেপারীরা এ মোকামে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ধান কেনা-বেচা করে থাকে। কিন্তু করোনায় যোগাযোগ ব্যবস্থার লক ডাউনের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকার বা ব্যাপারীরা ধান কিনতে আসছেনা। এ ছাড়া সরকারিভাবে ধান ক্রয় করা হচ্ছেনা। এমনকি মিলাররা ও ধান কিনছেনা। তাই হাওর থেকে ধান কিনে এনে এখন বিক্রি করতে না পারায় দূশ্চিন্তায় পাইকারী ক্রেতা ,ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা। একদিকে ধান বিক্রি করতে পারছেনা।
অন্যদিকে গত ২ সপ্তাহ ধরে ধানের দর মণ প্রতি ৭শ থেকে কমে ৬শ ৫০ টাকা দর নেমে এসেছে। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ। বেপারী, আড়তদার ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানান, ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় হাওর থেকে ধান কিনে এনে যে খরচ হয়েছে। এখন ধানের দর কমে যাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কায় ব্যবসায়ী,আড়তদারও পাইকারী ব্যবসায়ীরা। ধান বিক্রি করতে না পারায় এবং দেশ-বিদেশের পাইকার ও ব্যবসায়ীরা না আসায় ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে এ মোকামে। প্রাণহীণ হয়ে পড়েছে এ মোকাম।
এ বিষয়ে মিলার ফুল মিয়া ও খোরশেদ আলম জানান, হাওর থেকে ভৈরবের মোকামে প্রচুর ধান আমদানি হলেও আমরা এখনো সরকারি কোন রেট বা দর না পাওয়ায় ধান কিনতে পারছিনা। সরকার যদি ধানের নতন দর নির্ধারন করে দেয় তাহলে আমরা মিলাররা ধান কিনা শুরু করবো।
এ বিষয়ে ব্যাপরী ফারুক মিয়া, হাজি জিল্লুর রহমান,বিল্লাল মিয়া ও মোঃ নবী হোসেন জানান, আমরা হাওর থেকে যে দামে ধান কিনে এনেছি ,এখন খরচ পাতি হিসেবে ধানের দও পরছে প্রতি মণে ৭শ টাকার উপরে। অথচ মোকোমে ৬শ /সাড়ে ৬শ টাকা দর। এ ছাড়া করোনার কারণে নরসিংদী,সিরাজগঞ্জ,মুন্সিগঞ্জ,বিক্রমপুরসহ দেশের বিভিন্ন অব্জল থেকে পাইকাররা ধান কিনতে আসছেনা। সরকার বা মিলাররা ও ধান কিনছেনা। আমরা এখন ধান বিক্রি করতে পারায় চরম বিপাকে আছি।
এ বিষয়ে ভৈরব খাদ্য শষ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম নোমান কালের কণ্ঠকে জানান, হাওরে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় দেশের অন্যতম বৃহৎ ধানের মোকাম ভৈরবে ধান আসতে শুরু করেছে। তবে করোনায় লক ডাউনের কারণে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ী বা পাইকাররা আসতে না পারায় ধান বিক্রি হচ্ছেনা। এ ছাড়া মিলাররা ও সরকারিভাবে ও ধান ক্রয় হচ্ছেনা। যে কারণে বাজারে ধানের দর কমে গেছে। তবে সরকারের কাছে দাবি সরকার যেন চলতি মৌসুমে ধানের দাম নির্ধারন করে দেয়।