ঘরের মাঠে রিয়াল বেতিসের মুখোমুখি হলেই যেন গোল করতে ভুলে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ব্যর্থতার জাল ছিঁড়তে পারল না এবারও। আবারও পয়েন্ট হারিয়ে শিরোপা দৌড়ে বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়ল জিনেদিন জিদানের দল। আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে বৃষ্টি ভেজা ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে। লা লিগায় শেষ তিন রাউন্ডে দুবার ড্র করল শিরোপাধারীরা। রোববার আথলেতিক বিলবাওয়ের মাঠে জিতলে রিয়ালের চেয়ে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে যাবে আতলেতিকো মাদ্রিদ। প্রথম দেখায় গত সেপ্টেম্বরে বেতিসের মাঠে শেষ দিকের গোলে ৩-২ ব্যবধানে জিতেছিল জিদানের দল। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দলটির বিপক্ষে রিয়ালের ঘরের মাঠের পারফরম্যান্স খুব খারাপ। গত তিন মৌসুমেও নিজেদের আঙিনায় বেতিসের বিপক্ষে গোল করতে পারেনি স্পেনের সফলতম দলটি। রিয়ালের মাঠে ২০১৭-১৮ মৌসুমে ১-০ ও পরের মৌসুমে ২-০ গোলে জিতেছিল বেতিস। আর গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নদের মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা। এবারও পুরো ম্যাচেই ভুগতে দেখা গেল স্বাগতিকদের। প্রথম ২০ মিনিটে বল দখলে এগিয়ে ছিল বেতিস। তেমন কোনো সুযোগ অবশ্য কেউই তৈরি করতে পারেনি এ সময়ে। দারুণ ছন্দে থাকা বেনজেমা বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে প্রথম সুযোগ তৈরি করেন। তার কাটব্যাক পেয়ে রদ্রিগোর নেওয়া শট রক্ষণে প্রতিহত হয়। ওই আক্রমণেই সতীর্থের পা ঘুরে বল পেয়ে জোরালো শট নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড, যদিও সেটি ঠেকাতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি গোলরক্ষককে। প্রথমার্ধে দুই দল মিলিয়ে ওই এই একটি শটই ছিল লক্ষ্যে। দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে ডান দিক থেকে রদ্রিগোর আচমকা জোরালো শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবারে বাধা পায়। পাঁচ মিনিট পর বেতিসের দারুণ একটি সুযোগ নষ্ট হয়। তিন জনের মধ্যে দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার গিদো রদ্রিগেস। ৬৫তম মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন বোরহা ইগলেসিয়াস। সামনে একমাত্র বাধা গোলরক্ষক। কিন্তু শট নিতে দেরি করে ফেললেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড, ছুটে এসে বিপদমুক্ত করেন থিবো কোর্তোয়া। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে লুকা মদ্রিচের শট ঝাঁপিয়ে ফেরান বেতিস গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভো। ৭৭তম মিনিটে মার্কো আসেনসিওকে তুলে এদেন আজারকে নামান কোচ। চোট কাটিয়ে এক মাসেরও বেশি সময় পর মাঠে নামলেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড। পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মতো তেমন কিছুই করতে পারেননি তিনি। আরও একটি বিবর্ণ পারফরম্যান্সের পর শিরোপা ধরে রাখার সম্ভাবনা আরেকটু ফিকে হয়ে গেল রিয়ালে। ৩৩ ম্যাচে ২১ জয় ও আট ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৭১। ২ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে এক ম্যাচ কম খেলা আতলেতিকো মাদ্রিদ। ৩১ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে বার্সেলোনা। খুব বেশি পিছিয়ে নেই সেভিয়াও। ৩২ ম্যাচে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে তারা। বেতিসের বিপক্ষে দলের এমন সাদামাটা পারফরম্যান্স আরেকটি কারণেও জিদানের জন্য বাড়তি দুর্ভাবনার। আগামী মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে চেলসির মুখোমুখি হবে বেনজেমা-মদ্রিচরা।