সারাদেশে আবারও মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় পার্বত্য জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষনা করেছে জেলা প্রশাসন। এই বন্ধে হাহাকার শুরু হয়েছে পর্যটকবাহী চাঁদের গাড়ি চালক ও হেল্পারদের।
জেলার পর্যটন কেন্দ্র গুলো বন্ধ থাকলে চাঁদের গাড়ি চালকদের আয় রোজকারের কোনো উপায় থাকেনা। এতে করে তারা জীবন চালাতে বাঁধার মূখে পড়ে থাকে বিভিন্ন কিছুতে।
গাড়ি চললেই তাদের সংসারের খরচ বহন করা সম্ভব হয়। এ ছাড়া কেউ যেনো তাদের দিকে ফিরে তাকানোর নেই। এতে তাদের চলতে হয় কস্টের জীবন নিয়ে।
দেশে প্রথমবার করোনার সংক্রমণ দেখা দিলে লকডাউনের আওতায় পড়ে সারাদেশ। পর্যটন কেন্দ্রগুলো তখন বন্ধ হয়ে যায়। সরকার বিভিন্নভাবে ত্রাণ দিয়ে সহায়তা করেছে অসহায়দের। তখন চাঁদের গাড়ির চালকরাও পেয়েছিলো ত্রাণ সামগ্রী। কিন্তু এইবার বন্ধ হওয়ার পর তাদের দিকে এখনো পর্যন্ত কেউ ফিরে তাকায়নি।
জানাগেছে, পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করার পর থেকে তাদের ইনকাম করার কোনো পথ নেই। অনেকটা না খেয়ে জীবন বাঁচানোর মতো হয়েছে পরিস্থিতি। এভাবে বন্ধ হয়ে থাকলে তাদের জীবনের চাকা যেনো গাড়ির চাকার মতো চলা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে চালকদের পরিবার অনেক বড় ধরনের সমস্যার মূখে পড়বে খুব অল্প সময়ে।
খাগড়াছড়িতে পর্যটকবাহী দুই দরনের গাড়ি রয়েছে। এরমধ্যে একটি হলো সাদা রংয়ের পিকআফ ও সবুজ রংয়ের চাঁদের গাড়ি। এই দুই প্রকার গাড়ির জন্য রয়েছে দুটি সংগঠন। জীপ মালিক সমিতি ও পার্বত্য যানবাহন মালিক সমিতি।
পুরো জেলায় দুই সংগঠন মিলে চাঁদের গাড়ি ও পিকআপ রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪'শ। এই গাড়িগুলোর সাথে চালক এবং হেল্পার মিলে জড়িত প্রায় হাজার খানেক। সবগুলোই এখন কর্মহীন হয়ে পড়ে রয়েছে পর্যটন বন্ধ থাকার কারনে।
চাঁদের গাড়ি চালক মোঃ হানিফ বলেন, লকডাউনের কারণে আমাদের আয় বন্ধ হয়ে আছে। এভাবে দেশে লকডাউন থাকলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। প্রথমবার বন্ধ হওয়ার পর সরকারিভাবে ও সংগঠনের কাছ থেকে ত্রাণ সামগ্রী পেয়েছিলাম এগুলো দিয়ে কিছুদিন খেতে পারছি। কিন্তু এইবার এখনো পর্যন্ত আমাদের খবর নেওয়ার মতো কোনো মানুষ এখনো পাইনি।
পিক-আপের চালক গগেন ত্রিপুরা জানান, সারাদেশে যে মহামারি করোনা ভাইরাস দেখা দিয়েছে এটা কখন দূর হয় তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বর্তমান লকডাউনের কারণে আমাদের পর্যটকবাহী গাড়িগুলো বন্ধ হয়ে আছে। আমদের চলার কোনো পথ নাই। এভাবে যদি দেশের মধ্যে লকডাউন চলতে থাকে তাহলে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়ে জুমে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া আমাদের পরিবার চালানো সম্ভব হবেনা। সবাই না খেয়ে মারা যেতে হবে।
জীপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দেবনাথ ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে সারাদেশে আবারও লকডাউন দিয়েছে সরকার। যার ফলে সকল প্রকার পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে। পর্যটকবাহী গাড়িগুলো বন্ধ থাকার কারণে চালক এবং হেল্পার সবাই হতাস হয়ে পড়ে আছে। তাদের চলার কোনো উপায় নেই গাড়ি চলাচল না থাকলে। গতবার বন্ধের সময় সরকারিভাবে ত্রান সামগ্রী পেলেও এবার এখনো এমন কিছু দেখা যায়নি। এদিকে গাড়ি মালিকদের ইনকাম না থাকায় তারাও কোনো সহযোগিতা করতে পারছেনা চালক ও হেল্পারদের।
প্রসঙ্গ, দেশে আবারও করোনা সংক্রমন বাড়ায় ১ এপ্রিল থেকে ১৪ দিনের জন্য জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষনা করে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। এরপর বেড়ে তা ২১ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।