জঙ্গিবাদী সালাফি ও উগ্রবাদী হেফাজতের সাথে দীন ইমান ও শান্তিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা ইসলামের কোনো সম্পর্ক নাই। কওমী মাদ্রাসা মনিটরিংসহ হেফাজত ও সালাফি সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ করতে হবে। জঙ্গিবাদ, উগ্রপন্থা ও ধর্মীয় ছদ্মাবরণে দেশ বিরোধী সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে সরকারের আশু পদক্ষেপ দাবি করেছেন বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর সভাপতি ও ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের পীরে কামিল আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী'র নেতৃত্বে ৭১১ জন বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ও পীর মাশায়েখ।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর সভাপতি ও ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের পীরে কামিল আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী' একযুক্ত বিবৃতিতে বলেন, দেশের শান্তি শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট ও জানমালের ক্ষতির দায়ে ধর্মীয় পরিচিতির ছদ্মাবরণে হেফাজত, কওমী ও সালাফিবাদীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচারে সোপর্দ করতে হবে। উগ্রপন্থা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সাথে দীন ইমান ও ইসলামের নুন্যতম কোনো সম্পর্ক নাই। দেশের সরল প্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে যারা দেশের জানমালের ক্ষতি ও উগ্রপন্থা ছড়িয়ে শিশু কিশোর যুব শ্রেণীর মন মগজে দেশ বিরোধী চিন্তা ধারণা ইজমের চাষ করে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্ধকারে ঢেকে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। হলি আর্টিজান ও শোলাকিয়া ঈদগাহ ট্রাজেডিতে যেভাবে উগ্রপন্থী সালাফিবাদীদের ইন্ধন ছিলো, ঠিক তেমনি সম্প্রতি দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিদেশি মেহমানদের উপস্থিতিকে ইস্যু বানিয়ে কওমী খারেজী মাদ্রাসার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশ গ্রহণে দেশের বিভিন্ন জেলায় তান্ডবলীলা চালানো হয়েছে। মুফতি হান্নান, সায়েখ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাই জঙ্গিবাদী সালাফি ও উগ্রবাদী হেফাজতের সৃষ্টি। এদের ব্যাপারে শান্তিবাদী ও ইসলামের মূলধারার সুফিপন্থী হক্কানী আলেম পীর মাশায়েখেরা বার বার সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে আঙুল ফুলে কলা গাছে পরিণত করেছে। সরকার দুধ কলা দিয়ে সাপ পুষেছে তার মাশুল আজ সমগ্র জাতিকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করে দেশের শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষের কাছে ঘৃণার পাত্র হয়ে হেফাজত নামধারী জঙ্গি গুরুরা আজ হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার নাটক করছে। অর্থের লোভ, নারী কেলেঙ্কারি ও শিশু নির্যাতনের হেন কাজ নেই যা এরা করেনি। এসব খাবাপ কাজের মাধ্যমে তারা পবিত্র ইসলামকে কলঙ্কিত বিশ্ববাসীর কাছে নেতিবাচক উপস্থাপন করেছে। হেফাজতের নেতারা কমিটি বিলুপ্তির নাটক করে তাদের অপরাধ আড়াল করতে পারবে না। পীর ওলামা মাশায়েখগণ অবিলম্বে দেশে এ যাবৎ জঙ্গি হামলা ও দেশ ধ্বংসের তান্ডবলীলা পরিচালনা কারী সালাফিবাদী ও কওমী মোল্লাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জোরদাবী জানিয়েছেন। সাথে সাথে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের মতো সালাফিবাদের ছদ্মবরণে জঙ্গি সংগঠনগুলো ও হেফাজতের নামকরণে উগ্রপন্থী প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ সকল কওমী মাদ্রাসায় সরকারের মনিটরিংয়ের জন্য ওয়াচ সেল গঠন করতে দাবি জানান।
আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর নেতৃত্বে বিবৃতিদাতারা হলেন, শুকছড়ি দরবার শরীফের পীরে তরীকত আল্লামা সৈয়দ নাছেরুল হক চিশতী, ঘনিয়া দরবার শরীফের পীর আল্লামা হাফেজ জোনায়েদুল হক নকশেবন্দী, শাঈখুল হাদীস অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর, গাছতলা দরবার শরীফের পীর আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, হেলালীয়া হাক্কানী আঞ্জুমান দরবার শরীফের পীর আল্লামা মোশাররফ হোসেন হেলালী, মগবাজার দরবার শরীফের পীর আল্লামা হাবিবুল্লাহ আল কাদেরী, চান্দ্রা দরবার শরীফের পীর আল্লামা ড. হুজ্জাতুল্লাহ নকশেবন্দী, জিয়াউল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন যুক্তিবাদী, নেছারীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা রফিক উদ্দিন সিদ্দিকী, আল্লামা এনামুল হক সিকদার, মুফতি কামাল উদ্দিন আজহারী, অধ্যক্ষ কারী আবু তৈয়ব, অধ্যক্ষ আল্লামা ফখরুল ইসলাম আবেদী, উপাধ্যক্ষ সাইদুল আলম খাকী, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকের আহমদ ছিদ্দিকী, অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন তৈয়বী, অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান, অধ্যক্ষ ফারুক হোসাইন, অধ্যক্ষ শহীদুল্লাহ ফারুকী, অধ্যক্ষ সৈয়দ আইয়ুুব বদরী, অধ্যক্ষ আল্লামা এবিএম মনছুর মোল্লা, পীরজাদা নাজমুল হক আখন্দ নকশেবন্দী, অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আলী নকশেবন্দী, মাওলানা মো. আবদুছ ছাত্তার মোজাদ্দেদী, অধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম আবেদী, মাওলানা আবুল হাশেম শাহ্ মিয়াজী, মাওলানা কাজী মাহমুদুল হক, অধ্যক্ষ সৈয়দ আবু ছালেহ, অধ্যক্ষ মাওলানা শামসুদ্দোহা, মাওলানা মো. আল-আমিন দেওয়ান আল-আবিদী, মাওলানা মনির হোসাইন আবেদী, মাওলানা কাজী মফিজুর রহমান, মুফতি হেলাল উদ্দিন আলকাদেরী, মুফতী রফিকুল ইসলাম হেলালী, মুহাদ্দিস নিজাম উদ্দীন নোমানী, আল্লামা এনামুল হক সিকদার, মুফতি মাসুম বিল্লাহ হানাফী, অধ্যাপক আল্লামা শায়খ এমদাদুল হক, মুফতী বদরুর রেজা সেলিম, মাওঃ খাজা মঈন উদ্দিন আহমেদ জালালাবাদী, মাওঃ রফিকুল ইসলাম জাফরী, মাওলানা হাসানুর রহমান হোসাইনী নকশেবন্দী প্রমুখসহ মোট ৭১১ জন বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ও পীর মাশায়েখবৃন্দ।