চলতি বোরো মৌসুমে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ধান উৎপাদন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ফলে ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষাণ-কৃষাণীদের।
রাঙ্গামাটি জুরাছড়ি উপজেলায় জলে ভাষা জমিতে ধানের ব্যাপক সমারোহে ভরপুর সবুজ প্রান্তর। জমিতে জমিতে ধানের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারপাশ। কৃষাণ-কৃষাণী ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটায়। তবে গত বছরের মতো এই বছরও করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবে অনেক কৃষক ধান কাঁটার শ্রমিক সংকটে ভুগছেন। তবুও ধানের ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা।
জুরাছড়ি উপজেলার রাস্তার মাথা ও বনযোগীছড়া এলাকার কৃষক চৈতালী চাকমা ও জ্ঞান রঞ্জন চাকমা জানান, হ্রদের পানি যখন শুকিয়ে যায় তখন জলে ভাসা জমিতে তাঁরা নিজেরা অন্যান্য কাজের ফাঁকে ফাঁকে পরিশ্রম করে ধান চাষ করেন। এ কারণে তাঁদের খরচ কম হয়। এতে তাঁদের লাভ বেশি হয়। আর করোনাকালীন সময় তাদের পরিবারের সদস্যরা সারা বছর ভাতের জন্য আর ভাবতে হবে না। তাদের মতে, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর কোনো কোনো জমিতে ফলন খুব ভালো হয়েছে। এ রকম আরো অন্যান্য এলাকায় প্রত্যেক কৃষকরা ধান চাষ করে লাভবান হবেন বলে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
এ ব্যাপারে জুরাছড়ি কৃষি কর্মকর্তা সুস্মিতা চাকমা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ৪৬৮ হেক্টর জলেভাসা জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। আর যে বোরো ধান লাগানো হয়েছে তা কর্তনের উপযোগী হয়ে উঠেছে। বোরো ধানের উপযোগী আবহাওয়া অনুকুলে থাকার ফলে এবার বোরো আবাদে ফলনও ভালো হয়েছে। যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তা হলে জুরাছড়ি উপজেলায় ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন চাল কর্তনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এতে করে এই করোনা মহামারীতে জুরাছড়ি উপজেলায় খাদ্যের সমস্যা হবে না বলে আশা করছেন তিনি।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে জেগে উঠা সমতল জলেভাসা জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে রাঙ্গামাটি জেলায় কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসা ১৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। সরকারি ভাবে বোরো প্রনোদনার আওতায় কৃষকদের হাইব্রীড বীজ ধান ও বিনামূল্যে সার দেয়া হয়েছে। ফলে বোরোতে এবার ভালো ফলন হয়েছে। এতে ৫ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন চাউল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, উপজেলার প্রত্যেকটি এলাকায় ধান কাঁটার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এইবার ধানের ব্যাপক ফলন হওয়ায় যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় কৃষকেরা আশানুরূপ ফলন গোলায় তুলতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন অভিজ্ঞ মহল।