সিংড়ায় গৃহহীনদের ঘর বরাদ্দের গণশুনানীতে ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দের স্বজনপ্রীতির অনিয়ম তুলে ধরায় স্থানীয় এক সাংবাদিককে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল ইসলামের কাছে ভূক্তভোগী সাংবাদিক খলিলুর রহমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। খলিলুর রহমান দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানা যায়, মুজিব শতবর্ষে গৃহহীনদের ঘর প্রদানের জন্য সিংড়া উপজেলার ১১নম্বর ছাতারদীঘি ইউনিয়নের ৬০জন ভূমিহীনের তালিকা জমা দেন ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দ। স্থানীয় সাংসদ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশে বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টায় ছাতারদীঘি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ভূমিহীনদের বরাদ্দকৃত ঘরের তালিকার বিষয়ে গণশুনানী করেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম সামিরুল ইসলাম।
এসময় গণশুনানীতে উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিক খলিলুর রহমান ঘর বরাদ্দে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বজপ্রীতির অভিযোগ আনেন। অভিযোগে বলেন, পাওটা গ্রামের সাবিনার বাড়ি থাকলেও তাকে আবারও ঘর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আবদুর গফুরের বাড়ি অত্র ইউনিয়নে না হওয়ার পরও তাকে ঘর দেওয়া হচ্ছে। পরে ইউএনও ঘর দুটি বাতিল করে দেন।
এনিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে শুনানী শেষে পাওটা বাজারে ওই সাংবাদিককে প্রকাশ্যে দেখে নেয়ার হুমকি দেন চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দ। বৃহস্পতিবার (২৯এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাংবাদিক খলিলুর রহমান পেশাগত কাজে আসছিলেন। এ সময় একডালা বাজারে চেয়ারম্যানের ব্যাক্তিগত কার্যালয়ের সামনে তার পথ রোধ করে চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেল চালক মিন্টু প্রামানিক ও শাহিন মাস্টার। এ সময় চেয়ারম্যানের সামনে তাকে মারপিট মারপিট করা হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. খলিলুর রহমান বলেন, গণশুনাণীতে অনিয়মের প্রতিবাদ করার চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দ’র নির্দেশে তাকে অন্যায় ভাবে মারধর করেছে তার মোটর সাইকেল চালক মো. মিন্টু প্রামাণিক, শাহিন মাস্টার ও মো. ধলু। তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, ঘর বরাদ্দে অনেকের কাছ থেকে অর্থ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাচ্ছে না।
অভিযুক্ত মো.শাহিন মাস্টার এর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে (০১৭১৬-১৬৪৯৮২) মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ঘর বরাদ্দে অর্থ নেয়া হয়েছে এমন প্রচার করায় তার সাথে রাগারাগি হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দ বলেন, আমি তো তাকে মারপিট করা দেখেনি। সে সন্ত্রাসী ছেলে। মাদকেও সে আসক্ত। তার অপকর্ম নিয়ে সালিস মিমাংসা করা হয়েছে। শুনানীতে তার বোনের ঘর বরাদ্দের বিষয়ে বিরোধিতা করলে তাকে কিছু কথা বলা হয়েছে।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।