পাবনার চাটমোহরে তানজিলা খাতুন (২০) নামের এক অন্তসত্ত্বা গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১ মে) দিবাগত গভীর রাতের কোনো একসময়ে উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামে ওই গৃহবধূর স্বামীর নিজ বাড়িতে এঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ রোববার (২ মে) সকালে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়না তদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত গৃহবধূ ওই গ্রামের আঃ মমিনের স্ত্রী ও দুই মাসের অন্তসত্ত্বা।
নিহতের পিতা সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ভাদাস গ্রামের আলম হোসেন জানান,এক বছর পূর্বে তার মেয়ের সাথে চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে আঃ মমিনের সাথে দেড় লাখ টাকা যৌতুকের দিয়ে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। অল্পদিনের মধ্যে মেয়ের পিতা সমূদয় যৌতুকের পাওনা পরিশোধ করে দেন। এর পরও আঃ মমিন মাঝে মাঝে তার স্ত্রী তানজিলাকে চাপ দিতো বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে। মাস দুই হলো ওই গৃহবধূর খাবার দাবারে অরুচি দেখা দেয় ও স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়। তার স্বামী নিমাইচড়া গ্রামের এক মসজিদে ইমামতি করতেন এবং সেখানেই তিনি অবস্থান করত। গ্রামের বাড়িতে স্ত্রীর কাজে তিনি খুবই কম আসতেন। এরই ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকদিন পর আঃ মমিন গত শনিবার দিবাগত রাতে বাড়িতে আসে কিন্তু ওই দিনই রাতের কোনো একসময় আঃ মমিনের বিছানার পাশেই গৃহবধূ তানজিলা খাতুন মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত গৃহবধূর পিতা আলম হোসেন সাংবাদিকদের আরও জানান,তার জামাইকে (আঃ মমিন) তার বাড়িতে কোন অনুষ্ঠানে নিয়ে গেলে ৫ হাজার টাকা দাবি করত। তা দিতে ন পারলে মেয়ের সাথে খারাপ আচারণ করত। তার মেয়ে সুস্থ ছিল বলেও দাবি করেন তিনি। নিহত তানজিলার চাচা মো. সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন,এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়।
নিহত তানজিলার স্বামী আঃ মমিন দাবি করেন,রাতে একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম কিন্তু রাত একটার দিকে হঠাৎ স্ত্রী তানজিলা একটা ঝাঁকুনি দিল বলে মনে হলো। তারপর শেষ রাতে দিকে জানতে পেরেছি যে,সে (তানজিলা) মৃত্যুবরণ করেছে।
নিহত গৃহবধূর বড় জা রিমা বলেন,তানজিলা দীর্ঘদন ধরে পেটের ব্যথায় ভুগতেছিলেন এবং দুই মাসের অন্তসত্ত্বা ছিলেন। সে কারণে ঠিক মত খেতে পারত না। তবে তার (তানজিলার) কোন চিকিৎসা পত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
এব্যপারে নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খোকন বলেন,ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি জেনেছেন তবে কি কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন তা তিনি অবগত নন।
এব্যপারে চাটমোহর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) হাসান বাশির বলেন,পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাবনা মর্ঘে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।