এইচএসসি পাস করার পর উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর কলেজে বিএ ভর্তি হন আবদুল আলীম। সংসারে অস্বচ্ছলতার কারণে ছাত্র অবস্থায় সেখানে স্ক্রিন প্রিন্টের কারখানায় কাজ নেন। কিছুদিন পর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেলে বিএ পরীক্ষায় আর অংশ নিতে পারেনি। ভেঙ্গে যায় তার উচ্চ শিক্ষার লালিত স্বপ্ন।
নিরুপায় হয়ে চাকুরী নেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। সেখানে ভালো না লাগায় ইস্তোফা দেন চাকুরি থেকে। চলে আসেন এলাকায়। সামান্য পুঁজি নিয়ে শুরু করেন স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ। আবদুল আলীম আকন্দের বয়স এখন প্রায় ৪৮ বছর। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার আদাবাড়িয়া গ্রামের মৃত আদম আলী আকন্দের ছেলে তিনি। ৭ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
আব্দুল আলীম আকন্দ জানান, মাত্র ৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে তিনি প্রায় ৩০ বছর আগে স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ আরম্ভ করেন। এখন তিনি স্বাবলম্বী। ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের শরৎনগর বাজারে ঘর ভাড়া নিয়ে স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ করছেন তিনি।
তার কারখানায় টিস্যু ব্যাগের কাজ হয় বেশি। তাছাড়া টি-শার্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ব্যানার, ফেস্টুন, মগসহ স্ক্রিন প্রিন্টের যাবতীয় কাজ তিনি করে থাকেন। এখান থেকে প্রতিমাসে ভালো আয় হয়।
তিনি জানান, উপার্জনের এ অর্থ দিয়ে একটি পুরাতন ছোট অফসেট মেশিন কিনেছেন। দোকানে রেখেছেন দু’জন কর্মচারী। স্ক্রিন প্রিন্টের কাজের পাশাপাশি তিনি এখন অফসেট মেশিন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ছাপার কাজ করেন। এলাকা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা শহর থেকে তার কাজের অর্ডার আসে। এছাড়াও তিনি পৌর শহরের মন্ডলমোড়ে ৪ শতক জায়গা কিনে একটি টিনশেড বাড়ি করেছেন।
তিনি আরও জানান, এটিই তার উপার্জনের একমাত্র পথ। এতেই চলছে স্ত্রী, সন্তানসহ তার ৩ সদস্যের সংসার।
আবদুল আলীম বলেন, ‘পড়া-লেখা শিখে যে সব বেকার যুবক চাকুরীর জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে সহজেই তারা এ কাজ শিখে কম পুঁজি খাটিয়ে বেকারত্ব ঘুচাতে পারেন।’