দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অতীতের সকল রেকর্ড ভাঙ্গছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করোনায় মৃতের অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। লকডাউনে কাঁপছে দেশ। কিন্তু সীমান্ত এলাকার নিকটবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে যেন হারিয়ে গেছে করোনা ভীতি। জীবন যাত্রা একেবারে স্বাভাবিক। সড়ক মহাসড়ক, হাট-বাজার, বিপণী বিতান, কাঁচাবাজার, হাসপাতাল সর্বত্রই এখন উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। ঈদের পূর্ব মূহুর্তে হুমড়ি খেয়ে ক্রয়ের প্রতিযোগিতায় নেমেছে ক্রেতারা। এরমধ্যে মহিলার সংখ্যাই বেশী। সাথে রয়েছে শিশু। তাদের ভাবশাপ এমন যে মৃত্যুর চেয়ে মার্কেটিং করার গুরূত্ব অনেক বেশী। লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকার সময়ে নানা কৌশলে গোপনে দোকানে প্রবেশ করে মার্কেটিং করতে দেখা গেছে অনেক মহিলাকে। সাটার নামানো দোকানের সামনে অর্ধশতাধিক জোড়া জুতা। চিকিৎসকরা মাস্ককে গরীবের ভ্যাকসিন বললেও ব্যবহার করছেন না এখানকার শতকরা ষাট ভাগ মানুষ। মার্কেট গুলোতে নেই জীবাণু নাশক স্প্রে ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার। শুধু মার্কেটিং নয় হাসপাতাল, ব্যাংক, সরকারি বিভিন্ন ধরণের ভাতা গ্রহন, বিয়ে শাদি, সুন্নতে খাৎতœাসহ সকল আচার অনুষ্ঠানেই চলছে গিজাগিজি ঠাসাঠাসি। সরাইলে এমন চিত্র এখন নিত্য দিনের। সরাইল সদরের বকুলতলা, জনতা ব্যাংকের নীচের মার্কেট, শহীদ মিনার সংলগ্ন মার্কেট, ঈশা খা কমপ্লেক্স, অন্নদা স্কুলের মোড়, অরূয়াইল বাজার, কালিকচ্ছ ও শাহবাজপুর বাজার সর্বত্রই একই চিত্র। সরজমিনে দেখা যায়, সকাল ৭টার পরই বিভিন্ন বয়সের নারী পুরূষ ও শিশুরা আসতে থাকে মার্কেট গুলোতে। বেলা বাড়ার সাথে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের ভিড়। সদরের প্রধান সড়কের বালিকা বিদ্যালয় থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত এলাকায় সকাল ৯টার পরই জ্যামে আটকা পড়ে গাড়ি। শপিংমল ফুটপাত কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই। গিজাগিজি ঠাসাঠাসি করেই চলছে মার্কেটিং এর কাজ। বৈশাখের এই প্রচন্ড তাপদাহে ক্রেতারা ঘামছেন। কোন অলসতা বা বিরতি নেই। অধিকাংশ নারী ও শিশুর মুখে নেই মাস্ক। গিভেন্সি নামক কাপড়ের দোকানে একসাথে প্রবেশ করেছেন ৩০-৪০ জন ক্রেতা। জীবাণুনাশক স্প্রে নেই। নেই হাত ধোয়ার কোন ব্যবস্থা। ৩-৪ জনের মুখ কাপড়ে ঢাকা থাকলেও অন্যান্যের মুখে নেই মাস্ক। এমনকি বিক্রেতাও মাস্ক ছাড়াই কাজ করে যাচ্ছেন। শপিংমল ও অধিকাংশ বিপণী বিতানের মালিক কর্মচারীরা মাস্ক পড়ছেন না। আর মসজিদে শতকরা ৯৫ ভাগ মুসল্লিই মাস্ক বিহীন। ব্যাটারি ও সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ সকল ইচ্ছেমত যাত্রী চড়ছেন। অনেকেই আবার মাস্কের ব্যবহার নিয়ে নেগেটিভ মন্তব্যও করে বসেন। ব্যাংকসহ বিভিন্ন দফতরে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ এমন লিখাকে উপেক্ষা করেই আসছেন গ্রাহকরা। কোথাও নেই সামজিক দূরত্বের বালাই। উপজেলা কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গত দুই মাসে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইনে ২৪ জনকে ৪১ হাজার ৫শত টাকা জরিমানা করছেন। তারপরও উদ্ভুদ্ধ হচ্ছেন না লোকজন। নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, লোকজনকে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে আরো উদ্ভুদ্ধ করতে আমি ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছি।