‘এখন যে পরিবেশ চলছে অনেক অনেক কাস্টমার, অনেক বেশি মানুষের সাথে কথা বলতে হয়, যদি মাস্ক পড়ি তাহলে আমার কথা বলতে সমস্যা হয়, মানুষও কথা শুনে না। এই ক্ষেত্রে মাস্ক খুলতে হবে এবং গরমে আমি অনেক ঘামি, পাশাপাশি মাস্ক পড়লে প্রেসার আপডাউন করে। আমার নিশ্বাসের কষ্ট হয়। এজন্য আমি মাস্ক পড়ি না। করোনা ধরতে থাক। ভাই কথাটা খারাপ বলছি কি ? বাস্তব কথা বললাম’ এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন শেরপুর শহরের নিউ মার্কেট এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন। তিনি আরও বলেন, করোনা ধরে বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের। আমাদের রক্ত গরম, তাই করোনা শরীরে আসতে পারবেনা। ভাই, আপনারা মাস্কের কথা আমাদের আর বলবেন না। প্রয়োজনে চা খান, পান খান, তাও মাস্ক পড়ার কথা বলবেন না, অনুরোধ।
পাশেই কাপড় ব্যবসায়ী রমজান আলী। তিনি বলেন, ‘আচ্ছা ভাই সরকার যে মাস্ক পড়ার নিয়ম করছে এখন দেখেনতো কয়জনের মুখে মাস্ক আছে ? ঈদের কেনাকাটায় মানুষ মাস্ক পড়ে না, মাস্ক পড়লে কথা ঠিক মতো বুঝা যায় না। এজন্য মাস্ক পড়া বাদ দিয়েছি।ঈদের সময় মাস্ক ছাড়া বেচাকেনা করবো। করোনা ধরলে ঈদের পর চিকিৎসা করাবো।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে শেরপুরের অভিজাত শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা। কিছুকিছু দোকানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা করলেও অধিকাংশ দোকান মালিক ও কর্মচারীদের মুখে মাস্ক নেই। আর ক্রেতাদের বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। কারোর থুঁতনিতে, কারোর হাতে, কারোর ব্যাগে মাস্ক রেখে দিয়েছে ক্রেতারা। তাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, গরমের জন্য মাস্ক খুলে রেখেছেন। আর মাস্ক পড়লে কথা কম বুঝা যায় বলে দাবি করেন।
ঝিনাইগাতীর বাসিন্দা আবদুল আওয়াল। তিনি মুখে মাস্ক ছাড়া শেরপুর নিউ মার্কেটে কাপড় কিনতে এসেছেন। মাস্কের কথা বলার সাথে সাথেই রেগে গিয়ে বলেন, ‘আরে ভাই মাস্ক দিয়ে কি করবো। এট া দিলে মুখ গন্ধ করে, আওয়াজ কম শোনা যায়। কথা বললে কেউ বুঝে না। এজন্য মাস্ক নাই। পকেটেও নাই। আমি মাস্কই ব্যবহার করি না। আল্লাহ রহমতে কিছুই হবেনা আমার। আমি প্রথম থেকেই মাস্ক পড়ি না। এখন পর্যন্ত কিছু হয়নাই আর হবেও না।’
সজবরখিলা এলাকার বাসিন্দা লাল মিয়া মিয়া বলেন, ‘সবসময়ই মাস্ক পড়ি কিন্তু এখন মার্কেটে এসেছি মাস্ক ছাড়া। মাস্ক পড়লে দোকানদার কথা বুঝে না। আর রোজা নিয়ে এত জোরে কথা বলতে পারবো না বিধায় মাস্ক ছাড়াই মার্কেটে এসেছি। আল্লাহ রহমতে কিছু হবে না।’
কলেজ মোড় এলাকা থেকে খরমপুর এসেছেন রতœা বেগম। উদ্দেশ্যে জুতা কেনার। এ সময় কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, ‘ভাই দু-একজন ছাড়া করোর মুখে মাস্ক আছে নাকি, বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নাই। এজন্য আমিও মাস্ক পড়ি নাই। অবশ্য আমি মাস্ক সবসময় পড়ি। বাসাায় টেবিলের উপর মাস্ক রেখে চলে এসেছি।’
জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ.কে.এম আনোয়ারুর রউফ বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অবশ্যই মাস্ক ও সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। কেউ যদি মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি না পালন করে তাহলে শেরপুর ভালো থেকে খারাপের দিকে যাবে। তাই সবাইকে মাস্ক ও সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মানার অনুরোধ করেন তিনি।