রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতির কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে দাবি করেছেন সমিতির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এ.কে.এম. মোজাম্মেল হক। সমিতির নির্বাচনকে বানচাল ও অনিয়ম দুর্নীতি ঢাকতেই সাবেক সভাপতি আবু আজগর পিন্টু পরিকল্পিত ভাবে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
বুধবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে এ ঘটনায় রংপুর নগরীর দক্ষিণ গুপ্তপাড়ায় জেলা মটর মালিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় সমিতির সদস্যদের মধ্যে একধরণের আতঙ্ক বিরাজ করছিল।
সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক দাবি করেন তাকে হত্যা চেষ্টার উদ্দেশ্য থেকেই দুর্বৃত্তদের লেলিয়ে দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ করিয়েছে সাবেক সভাপতি আবু আজগর পিন্টু। বিভিন্ন সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সমিতির অর্থ তছরুফ করেছে সাবেক সভাপতি ও তার লোকেরা। এনিয়ে সাবেক সভাপতি আবু আজগর পিন্টুকে চিঠি দিয়ে তলব করায় তিনি ক্ষুদ্ধ হয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
মোজাম্মেল হক বলেন, আমি প্রতিদিন রাত আট থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে সমিতির কার্যালয়ে আসি। বুধবার দুর্বৃত্তরা আমার উপস্থিতির সময় অনুমান করে রাত পৌনে নয়টার দিকে কার্যালয়ের ভিতরে পরপর বেশ কয়েকটি ককটেল ছুঁড়ে মারে। এগুলো বিস্ফোরিত হলেও কেউ হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বিস্ফোরণের পর সমিতির সদস্যরা ধাওয়া করলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। ওই সময়ে আমি সমিতির কার্যালয়ের বাহিরে থাকায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছি। এ ঘটনায় আমি আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রয়োজনে আমাকে আইনের আশ্রয় নিতে হবে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সমিতির লাখ লাখ টাকা তছরুফের একাধিক উঠে। তার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ভাবে সমিতির তহবিল থেকে প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন, বিভিন্ন রুটে অবৈধভাবে গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিয়ে গোপনে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে চাঁদা উত্তোলন, সমিতি থেকে টাকা নিয়ে ব্যক্তিগত কর্মচারীর বেতন, ইন্টারনেট বিল প্রদানসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করাসহ জড়িতদের চিন্হিত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান সমিতির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য-১ এ.কে.এম মোজাম্মেল হক। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক দপ্তর সম্পাদক মোসাহারুল আজম চৌধুরী, সাবেক প্রচার সম্পাদক মনোয়ারুর ইসলাম মনোয়ার, সাবেক সড়ক সম্পাদক সৈয়দ আফতাব উজ-জামাল লিপন, সদস্য মাহামুদুল হাসান মুরাদ, ফারহান জিহাদ প্রমুখ।
এব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রতি তিন বছর পরপর রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে কমিটির মেয়াদ শেষ হলে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাকে আহ্বায়ক ও এ.কে.এম. মোজাম্মেল হককে এক নম্বর সদস্য করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন আয়োজন সম্পন্ন করতে বিলম্ব হচ্ছে। বর্তমানে সমিতিতে জেলার প্রায় দুই শতাধিক সদস্য রয়েছে।