সকালে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগের পর সন্ধ্যায় অভিযুক্তদের থানায় ডেকে খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত দিয়ে মিটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এসআই কাজী নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে। যশোরের মণিরামপুরে থানায় এ ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকাল ৭ টার দিকে মণিরামপুর-রাজগঞ্জ সড়কের মান্দারতলা নামক স্থানে একটি ইটভাটার সামনে থেকে এক ধান ব্যবসায়ীর টাকা ছিনিয়ে নেয় ২ যুবক।
জানাযায়, বুধবার ঘটনার দিন সকালে সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের তুজলপুর গ্রামের কবির হোসেনের ছেলে রাসেল হোসেন (২২) নামের এক ট্রলি চালক ধান নিতে মণিরামপুরে আসছিলেন। তার কাছে ধান কেনার জন্য ধান ব্যবসায়ী সরোজিতের দেয়া ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা ছিল। পথিমধ্যে মণিরামপুর-রাজগঞ্জ সড়কের মান্দারতলা নামক স্থানে একটি ইটভাটার কাছে পৌছুলে তার গতিরোধ করে মণিরামপুর পৌর এলাকার বিজয়রামপুর গ্রামের পরানের ছেলে সবুজ হোসেন (২২) ও আবদুল লতিফের ছেলে হাবিবুর রহমান (২৩)।
মাদক থাকার ভূয়া অভিযোগ তুলে রাসেলের দেহ তল্লাসি করে টাকা পেয়ে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তারা। টাকা না দেয়ায় রাসেলকে মারপিট করার এক পর্যায় নিজেকে রক্ষা করতে দৌড়ে পার্শ^বর্তী আমির হোসেনের বাড়ির একটি ঘরে উঠে দরজা লাগিয়ে দেয়। সবুজ ও হাবিব রাসেলের পিছু ধাওয়া করে। এরমধ্যে আরো কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেলযোগে সেখানে গিয়ে তাদের সাথে এক হয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে রাসেলকে ধরে ফের মারপিট করে সমুদয় টাকা ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।
পরে সাড়ে ১১ টার দিকে রাসেল মণিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগের পর উপপরিদর্শক কাজী নাজমুস সাকিবের পৃষ্টপোষকতায় ঘটনা ভিন্নখাতে মোড় নেয়। খবর পেয়ে ধান ব্যসায়ী সাতক্ষীরা জেলার কলোরোয়া থানার ঝাউডাঙ্গা গ্রামের সরোজিতসহ এলাকার কয়েকজন থানায় আসেন। এরমধ্যে এসআই নাজমুস সাকিবের তৎপরতায় ছিনতাইয়ের সাথে জড়িতরা থানায় আসলে ভূক্তভোগি রাসেল টাকা ছিনতাইয়ের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করেন। এক পর্যায় থানার এসআই নাজমুস সাকিবের উপস্থিতিতে ছিনতাইকৃত টাকা ব্যবসায়ী সরোজিতের হাতে তুলে দেয়া হয়।
ভূক্তভোগি ট্রলি চালক রাসেল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে আসার সাথে সাথেই মাদক কারবারি বলেই গতিরোধ করে টাকা ছিনিয়ে নিতে তাকে মারপিট করা হয়। এ সময় তাদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পাশর্^বর্তী একটি বাড়ির ঘরে আশ্রয় নিলেও সেখান থেকে বের করে এনে ফের মারপিট করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তিনি তার মালিকের পরামর্শে মণিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
ব্যবসায়ী সরোজিৎ বলেন, খবর পেয়ে তিনি দুপুরের দিকে মণিরামপুর থানায় আসেন। এরপর সন্ধ্যার দিকে এসআই নাজমুস সাকিবের উপস্থিতিতে তার হাতে ছিনতাইকৃত টাকা তুলে দেয়া হলে বাড়িতে চলে আসেন। পরে শুনেছেন এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
এসআই নাজমুস সাকিব তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উভয় পক্ষ থানায় বসে মিমাংসা করে নিয়েছে। থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উপজেলার নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ির উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে আসবেন বলে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন।