চিরিরবন্দরে কারেন্টহাট ডিগ্রী কলেজে সভাপতি নয়, বরং অধ্যক্ষের গাফিলতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ঈদের পূর্বে ৪১ জন শিক্ষক কর্মচারী বেতন না পেয়ে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ওই অধ্যক্ষ নিজের দায়িত্বহীনতাকে আড়াল করতে সভাপতির উপর দায় চাপিয়ে দিয়ে ব্যাক্তিস্বার্থ হাসিল করায় কলেজে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। শিক্ষক কর্মচারীগণের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জালাল উদ্দিন মজুমদার প্রতিষ্ঠান হতে ছুটি না নিয়ে ও সভাপতির অনুমতি ছাড়া প্রায় ৩ মাস যাবত ঢাকায় ও মাঝে মধ্যে এলাকায় অবস্থান করলেও প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা ওই অধ্যক্ষ ঢাকায় থাকলেও তার মৌখিক নির্দেশে বিধি বর্হিভূতভাবে একজন সিনিয়র শিক্ষকের স্বাক্ষরে বৈশাখী ভাতা জমা ও উত্তোলন করা হয়। ওই অধ্যক্ষ গত ১২ মে ঈদের সরকারি ছুটির শেষদিন কলেজে উপস্থিত হয়ে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত বেতন বিল তৈরী করে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩ টায় সভাপতির কাছে স্বাক্ষরের জন্য গেলে সভাপতি হাছিবুল হাসান তাঁর দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে ওই অধ্যক্ষ কোন সদুত্তর না দিয়ে চলে যান। এ সময় সভাপতি সংশ্লিষ্ট সোনালী ব্যাংক চিরিরবন্দর শাখায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বেতন বিল জমার দেয়ার বিষয়ে জানালে ব্যাংক কতৃপক্ষ শেষ কর্মদিবসে ব্যাংকে পুরো উপজেলার কয়েকশত শিক্ষক কর্মচারীর বেতন ভাতা প্রদানে প্রচুর ভিড় থাকায় ওই সময়ে বেতন বিল জমা নিতে অস্বীকার করেন। এতে করে ওই কলেজের ৪১ জন শিক্ষক কর্মচারী বেতন ভাতা জমা ও উত্তোলন করতে না পেরে ঈদ আনন্দ হতে বঞ্চিত হন। তবে ১৭ জন শিক্ষক ও কর্মচারীকে ঈদের পূর্বেই সভাপতি ব্যাক্তিগতভাবে বেতনের সমান টাকা দিয়ে ঈদ করার সুযোগ করে দেন।
ওই কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও স্থানীয় আউলিয়াপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান হাছিবুল হাসান বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ ছুটি না নিয়ে দীর্ঘদিন ঢাকায় ও মাঝে মধ্যে এলাকায় অবস্থান করলেও প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকেছেন। এ সময় রেজুলেশন ব্যাতিরেকে তিনি কাউকে দায়িত্ব না দিয়েও একজন সিনিয়র শিক্ষককে দিয়ে কলেজের বৈশাখী ভাতা বিল প্রস্তুত করালেও শিক্ষক কর্মচারীদের কথা বিবেচনা করে বৈশাখী ভাতার বিলে প্রতিস্বাক্ষর করে সহযোগিতা করেছি। ঈদের পূর্বে বরং অধ্যক্ষের গাফিলতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ও ব্যাংক কতৃপক্ষ শেষ মুহুর্তে বেতনবিল জমা নিতে অনিহা প্রকাশ করায় শিক্ষক কর্মচারীগণ বেতনভাতা খেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অধ্যক্ষ নিজের ভূল ঢাকতে পুরো ঘটনাটি আড়াল করে সভাপতির উপর দোষ চাপিয়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশে ইন্ধন দেন। পুরো বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের অনুরোধ জানাচ্ছি এবং ওই সংবাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ জালাল উদ্দিন মজুমদার তাঁর দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিতির সদুত্ত্বর দিতে না পারলেও গাফিলতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কথা অস্বীকার করে জানান, বেতনবিল নিয়ে সভাপতির কাছে কলেজের ক্যাশিয়ারসহ গিয়েছিলাম। সভাপতি বেতনবিলে স্বাক্ষর না করায় বেতনবিল জমা করা সম্ভব হয়নি। ওই সময় প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ায় কমিটির অন্য সদস্য মোঃ আজর শাহের (বড় শ্যালক) কাছে বেতনবিল জমা দিয়ে চলে আসি। তিনি আরো জানান, ঈদের পরে অফিস খোলার দিনেই সভাপতি বেতন বিলে স্বাক্ষর করেছেন। শিক্ষক কর্মচারীগণ সকলেই বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন।