আইন-শৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানা উদ্যোগে থামানো যাচ্ছে না চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কপথে মরণ নেশা ইয়াবা পাচার। মাদক পাচারকারীরা বরং নিত্যনতুন কৌশল ও অভিনব কায়দায় ইয়াবা পাচার অব্যাহত রেখেছে। ফলে প্রায়ই ওই সড়কে ধরা পড়ছে ইয়াবার ছোট-বড় চালান। ইয়াবার ওসব চালান টেকনাফ, উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত পথ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। সড়কে পুলিশের সতর্কতামূলক অবস্থান থাকার পরও চোরাচালানকারীরা বিভিন্ন কৌশল পালটে ইয়াবা পাচার করছে। সড়ক পথে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লা হয়ে ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে চলে যাচ্ছে ইয়াবার চালান। নীল, লাল রংসহ বিভিন্ন রঙের ছোট প্যাকেটে ২০০টি ট্যাবলেট প্যাকেটজাত করে পাচার হয়। আর ইয়াবা পাচারে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ এবং দেশের যুবসমাজ ও অভাবী নারী-পুরুষকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মাদক পাচারকারীরা কখনো যাত্রীবেশে, কখনো চালকের আসনে, কখনো ভিক্ষুক-প্রতিবন্ধী ও সুফি সেজে ইয়াবা পাচার করছে। কক্সবাজার থেকে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, দূরপাল্লার বাস, অ্যাম্বুলেন্স ও মালবাহী-লবণবাহী ট্রাক ও মিনিট্রাকের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে ইয়াবার চালান যাচ্ছে। সড়ক পথে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১৮টি চেকপোস্ট রয়েছে। প্রায়ই শত শত ও হাজার হাজার ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ছে। গত কয়েক মাসে লোহাগাড়ার চুনতি চেক পোস্টসহ উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক লক্ষাধিক পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও অনেক পাচারকারীকে পুলিশ আটক করেছে। গত ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ ১ লাখ ১৮ হাজার পিস ইয়াবা ও মার্চ মাসে ৯০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে। বেশির ভাগ ইয়াবা চালানই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহন থেকে উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকছে ইয়াবা।
এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ইয়াবা সেবনে শরীরে নানা জটিল রোগ হয়। ইয়াবায় ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ এমফিটামিন রয়েছে। যা সেবনে কিডনি নষ্ট, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকলাঙ্গসহ স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসসহ হার্টএ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে।
অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, মাদকদ্রব্যসহ ইয়াবার সঙ্গে কোনো আপোষ নেই। ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান জিরো টলারেন্স। পাচারকারীরা যতোই কৌশল করুক না কেন পার পাবে না। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক পথে ইয়াবা পাচার নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ফলে পাচারকারীরা রেহাই পাচ্ছে না।