ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে শত বছরের পুরাতন সরকারি সড়ক ও খাল দখল করে বাড়ি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে একদল দখলদার। উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কানিউচ্ছ গ্রামে চলছে এ দখল পক্রিয়া। ফলে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে ইউনিয়নের ৬-৭ গ্রামের যাতায়ত। পানি নিস্কাশন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে ৫ গ্রামের। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন উপসহকারি ভূমি কর্মকর্তা একাধিকবার ভরাট কাজে বাঁধা দিয়েছেন। কিন্তু আমলে নেননি তারা। সরজমিনে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, কানিউচ্চ গ্রামের দক্ষিণ পাশে দিদির খালের শাখা থেকে আরেকটি খাল বুড্ডা হয়ে তিতাস নদীর সাথে মিলেছে। বাড়িউড়া থেকে এই খালের পাশ দিয়ে রয়েছে সরকারি একটি সড়ক। নকশা অনুসারে ৫২ ফুট প্রস্থের সরকারি এ সড়কটিও শেষ জায়গা নদীর ঘাট। নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ৬-৭ গ্রামের কৃষকসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষ বহু যুগ ধরে এ সড়কে চলাচল করে আসছেন। আর ৪-৫ টি গ্রামের বাড়িঘরের পানি সড়ক সংলগ্ন পাশের খাল নিস্কাশন হয়ে নদীতে পড়ে। সম্প্রতি গ্রামের বাসিন্ধা সোহরাব মিয়া ও মানিক মিয়া খাল ও সড়কের বড় অংশ মাটি ফেলে ভরাট করে ফেলেছেন। তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে নুরূল্লাহ, লিটন, সুবোদ দাস ও নান্নু মিয়াও পাশের খাল সড়ক ভরাট করছেন। ৫২ ফুট প্রস্থের সড়ক এখন ১০-১২ ফুট হয়ে গেছে। হুমকিতে পড়েছে কাটানিশার, কানিউচ্চ, বুড্ডা ও গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্ধাদের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা। শত বছরের পুরাতন সরকারি সড়ক ও খাল দখলে স্থানীয় লোকজনের কোন বাঁধাই মানেননি দখলদাররা। এমনকি স্থানীয় উপসহকারি ভূমি কর্মকর্তার বাঁধাকেও তোয়াক্কা করেননি। কৃষক মজিবুর রহমান (৫০)ও জিলন মিয়া (৫৫) জানান, আগে এ রাস্তা দিয়ে বাড়িতে রিক্সা যেত। সড়কের পাশের বাড়ি গুলো সড়ক থেকে উচুঁ। এখন সামান্য বৃষ্টি হলে বাড়ির মাটি পড়ে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়ে। দূর্ভোগের শেষ নেই। পাশের খাল দিয়ে নৌকায় মালামাল আনতাম। কানিউচ্ছ সহ কয়েকটি গ্রামের পানি নিস্কাশন হত এ খালেই। ভরাটের পর সব বন্ধ। আমাদের হাজারো আকুতি মিনতি কানেই নেননি দখলদাররা। এখন বৃষ্টি হলে পুরো গ্রামই পানিতে তলিয়ে যাবে। দখলদার সোহরাব মিয়ার ভাই শফিক মিয়া (৩৫) বলেন, ভরাট কাজে বাঁধা দেওয়ায় স্থানীয় সর্দারদের নিয়ে বসেছিলেন। তারা বলেছিল সমস্যা হলে মাটি সরিয়ে ফেলবে। কিন্তু এখন মাটি সরিয়ে নিচ্ছেন না। দখলদার সোহরাব মিয়া বলছেন, আমাদের জায়গা আমরা ভরাট করেছি। এখানে সরকারের কোন জায়গা নেই। আবার সুবোদ ও লিটন বলছেন, সড়কের অল্প জায়গা ভরাট করেছি। প্রয়োজনে সরিয়ে ফেলব। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, তাদেরকে একাধিকবার বাঁধা দিয়েছি। তারা আমার কথা শুনেননি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব। এ ব্যাপারে নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, সরকারি জায়গা নিজের ইচ্ছামত কেউ দখল করতে পারেন না। আমি খুঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।