নগরীর কাশিপুর এলাকার পিতৃহারা দুই ভাই-বোনকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের ‘বিয়ের পাগল’ মা। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর গত পাঁচ বছরে পাঁচটি বিয়ে করেছেন বিয়ে পাগল মাকসুদা বেগম।
রোববার সকালে বিয়ে পাগল ওই নারীর বিরুদ্ধে তার প্রথমপক্ষের দুই সন্তান অভিযোগ করেন, কিছুদিন পরপরই তাদের মায়ের বিয়ে করাটা এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। তারা আরও জানান, তাদের বাবার মৃত্যুর মাত্র এক মাসের মধ্যে তাদের মা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। পরবর্তীতে গত পাঁচ বছরে মোট পাঁচটি বিয়ে করেন। সবশেষ কাশিপুর ইউনিয়নের বিল্ববাড়ী এলাকার বাসিন্দা নয়ন হাওলাদারকে ষষ্ট স্বামী হিসেবে বিয়ে করেন মাকসুদা। বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই গত ৭ মে নয়নকে ডির্ভোস দেওয়ার পরেও রহস্যজনকভাবে এখনও নয়ন হাওলাদারকে নিয়েই বসবাস করছেন ওই নারী।
স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে মাকসুদার প্রথমপক্ষের ছেলে ও মেয়ে আরও জানান, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি দলিল করে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় চাঁপ প্রয়োগ করে আসছেন মাকসুদা বেগম ও তার ষষ্ট স্বামী নয়ন হাওলাদার।
মাকসুদার পুত্র মাসুদ হোসেন বলেন, গত শুক্রবার নগরীর নতুন বাজার এলাকায় তাকে ডেকে নিয়ে নয়ন একটি স্টাম্পে স্বাক্ষর করতে বলেন। ওইসময় সে (মাসুদ) কৌশলে পালিয়ে নগরীর মতাসার এলাকার খালাবাড়িতে আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে শনিবার (২২ মে) মাসুদ তার বাবার পৈত্রিক বাড়িতে গেলে তার মা মাসুদা বেগম বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় তার (মাকসুদা) বিবাহিতা মেয়েকেও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাকসুদা বেগমের বোন বলেন, মাকসুদা তার প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িয়ে পরেছে। কিছুদিন পর পর বিয়ে করে একজনকে ডির্ভোস দিয়ে অন্যজনকে বিয়ে করা তার এখন নেশায় পরিনত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বোনের এমন কর্মকান্ডের কারণে তারা এলাকায় মুখ দেখাতে পারছেন না।
মাকসুদার মেয়ে বলেন, মায়ের এমন কর্মকান্ডের কারণে সম্প্রতি সময়ে আমাকে আমার শ্বশুড়বাড়ি থেকে পাঠিয়ে দিয়েছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনে। বাড়িতে আসার পর পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি লিখে নেওয়ার জন্য মা ও তার ষষ্ট স্বামী নয়ন হাওলাদার অব্যাহত চাঁপ প্রয়োগ করে আসছেন। তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় শনিবার (২২ মে) আমাকেও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা জানান, বিল্ববাড়ী এলাকার বাসিন্দা নবমুসলিম মরহুম সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী মাকসুদা বেগম এলাকায় ‘বিয়ে পাগল’ নামে পরিচিতি লাভ করছেন। কিছু দিন পর পর বিয়ে করাই হচ্ছে তার নেশা। তারা আরও বলেন, সর্বশেষ তার প্রথমপক্ষের ছেলে-মেয়েকে তাদের পৈত্রিক বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার বিষয়টি অমানবিক। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাকসুদা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি না হওয়ায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।