নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বিয়ের প্রলোভনে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরলো এক ১৩ বছরের নাবালিকা। এ ঘটনায় গত (১৯ মে) থানায় অভিযোগ দাখিল করেছে ঐ নাবালিকার পরিবার। অভিযোগের পাঁচ দিনেও ধর্ষক মো.কামরুল ইসলাম (২১)কে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে গ্রেপ্তারে পুলিশের চিরুনী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি(তদন্ত) মীর মাহবুবুর রহমান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বর মাসে শেষ দিকে কুল্লাগড়া ইউনিয়নের পলাশগড়া গ্রামের পাঞ্জর আলীর ছেলে কামরুল ইসলাম একই গ্রামের ঐ নাবালিকা মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো। ওদের বাড়ির পাশ দিয়ে আসা যাওয়ার সময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। সম্প্রতি নাবালিকার শারীরিক গঠনের পরিবর্তন দেখা দিলে প্রেমের বিষয়টি পরিবারকে জানায়। বিষয়টি জানাজানি না করে উভয় পক্ষের লোকজন গত ১৮ মে রাতে গ্রাম্য সালিশ বসে। সেখানে কিশোরীর নামে দুই কাঠা জমি রেজিষ্ট্রি ও তিন লক্ষ টাকা দেনমোহর দিয়ে বিয়ে পড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। সালিশের পরদিন সকালে ঐ কিশোরীকে বধূ হিসেবে মেনে নিবে না বলে পাঞ্জর আলী(৫২) ও তার বড় পুত্র নাজমুল ইসলাম(৩২) ভুক্তভোগীর পরিবারকে জানিয়ে দেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ভিকটিম নাবালিকা’কে ব্র্যাকে আইনি সহযোগিতার জন্য পাঠালে মানবাধিকার কর্মীরা দুর্গাপুর থানায় নিয়ে যান।
ভুক্তভোগীর বড় ভাই সোহাগ জানান, তিন বোনের এক ভাই আমি। সে সবার ছোট বোন। তবে ওর এখনো চৌদ্দ বছর পূর্ন হয়নি। বিয়ের প্রলোভনে বোনটিকে ধর্ষণ করেছে কামরুল ইসলাম। ধর্ষণের বিষয়টি বিয়ের জন্য আপোষ-মিমাংসার জন্য স্থানীয় ইউপি মেম্বার সবুজ মিয়া ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করছে কামরুল ইসলাম। তবে ওর পিতা ও বড় ভাইয়ের জন্য কামরুল ইসলাম আমার বোনকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে পারেনি। কুল্লাগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমা বলেন, উভয় পরিবারের লোকজনের সম্মতিতে বিয়ে রেজিস্ট্রি করানো চেষ্টা করেছি। কিন্তু ছেলে পক্ষের লোকজনের চরম গাফিলতিতে সেটি হয়ে উঠেনি। কিশোরী ধর্ষণের বিষয়টি কঠিন বিচার হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নুর-এ আলম বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবারকে সহায়তা দিতে থানায় ধর্ষণ মামলা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। মামলা নেয়ার পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।