চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের সোনাইচন্ডী ক্যাবল নেটওয়ার্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক অংশীদারদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় বিবদমান দুটি অংশীদারদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে কেবল নেটওয়ার্ক গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। সোনাইচন্ডী ক্যাবল নেটওয়ার্কের পরিচালক আবদুল মান্নান খাঁন এর প্রতিকার চেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, গোমস্তাপুর সার্কেল বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মান্নান খাঁনের অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিনত থেকে সোনাইচন্ডী ক্যাবল নেটওয়ার্ক নামে আবদুল মান্নান খাঁন,শাজাহান আলী,মাহাবুর রহমান,শফিকুল ইসলাম ও আবদুল মালেক মুনি যৌথভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। পরবর্তীতে আবদুল মালেক মুনি তার অংশ মান্নান খানের কাছে বিক্রয় করে দেয়। এতে মান্নান খান দু'অংশের মালিক হয়। ২০১৫ সালে অংশীদার সাজাহান আলী তার দু'অংশ লীজ নেই। ২০১৭ সালে তিনি পুণরায় মৌখিকভাবে লীজ নেয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে অংশীদারগণ নিজ নিজ এলাকা ভাগ করে নেয়। ওই সময় আবারও সাজাহান আলী মান্নান খাঁনের অংশের এলাকার মাসিক ৩৯ হাজার টাকা করে লীজ নেয়। তার কাছে ২০১৮ সালে বকেয়া ২লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা,১৯,সালে ২লক্ষ ১১ হাজার টাকা,২০ সালে ২লক্ষ ৭৬ হাজার ৩'শ টাকাসহ ৩ বছরে তার বকেয়া দাড়ায় ৭লক্ষ ৭৬ হাজার ৩'শ টাকা। এ ছাড়া ২০১৩ সাল থেকে মালামাল ক্রয় বাবদ ৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৪'শ ৮০ টাকা, সাজাহানের নিজস্ব এলাকায় ১লক্ষ টাকাসহ মোট ১৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭'শ ৮০ টাকা পাওনা রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে লীজ নেয়া ওই এলাকার ব্যবসা করবেনা বলে সাজাহান জানিয়ে দেন। আর বকেয়ার টাকা কিছুদিনের মধ্যে পরিশোধ করবে বলে মান্নান খানের কাছে সময় নেন। পরে মান্নান খান তার অংশের এলাকায় নিজস্ব লোকজন দিয়ে পুণরায় ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেন। গত ৭মে সাজাহান আলী বকেয়ার টাকা দিবে না বলে তার লোকজন দিয়ে ওই এলাকা থেকে মান্নান খানের লোকজনকে তাড়িয়ে দেয় এবং হত্যার হুমকি দেন। এতে করে মান্নান খান ওই এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেনা। এ ছাড়া ৪ এপ্রিল ইন্টারনেটের ২কিলোমিটারের ফাইবার লাইন খুলিয়া নিয়ে সাজাহান তার ব্যবসার কাছে লাগিয়ে বিরাট একটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
তাদের বিবাদমান সমস্যা সমাধানে নাচোল উপজেলা চেয়ারম্যানের আবদুল কাদের উভয়কে নিয়ে বসেন। তাদেরকে সমাধান করে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে সাজাহান সময়ক্ষেপন করতে থাকে ও পাওনা টাকা দিবেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন মান্নান খাঁন।
এ বিষয়ে শাজাহান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আব্দুল মান্নান খাঁন জোরপূর্বক ভাবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমার সোনাইচন্ডী ডিস লাইন জবর দখলের পায়তারা করছে। বিষয়টি নিয়ে নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদেরের কাছে একাধিক বার বসা হয়েছে। উভয় পক্ষকে সুষ্ঠভাবে এর আগে সমাধান করে দিলেও মান্নান খাঁন সেই সিদ্বান্ত কে উপেক্ষা করে নতুন করে আমার ডিস লাইন ব্যবসা জবর দখলের পায়তারা করছে। তার কাছে মান্নান খাঁন কোন টাকা পাবেননা বলে তিনি মুঠোফোনে জানান। তার নিজস্ব কন্ট্রোল রুম থেকে ব্যবসা পরিচালিত করেন। সরকার প্রদত্ত ট্যাক্স ও ভ্যাট দিয়ে থাকেন।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী আবদুল মান্নান খাঁন বলেন,সোনাইচন্ডী ক্যাবল নেটওয়ার্ক আমার বৈধ ব্যবসা। সাজাহান লীজ চুক্তিতে তার কাছে ব্যবসা শুরু করেন। এখন সে পাওনার টাকা পরিশোধ করেছেন না। সম্প্রতি সে বলছে এ এলাকাতে আর আসবেন না,আপনার কোন ব্যবসা নাই। জোর করে আমার ব্যবসা দখল করতে চাচ্ছে।এমনকি পাওনা টাকা এখন পর্যন্ত পরিশোধ করতেছে না।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু সমাধানের জন্য উভয়পক্ষে তার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।