নাটোরের লালপুর উপজেলার চামটিয়া মাঠে একটি পুকুরে সংস্কার করতে গিয়ে গুপ্ত আমলের ১শ ৪৫ কেজি ওজনের পাথরের একটি মূর্তি পাওয়া গেছে।
লালপুর থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৫ মে ২০২১) লালপুর উপজেলার চামটিয়া মাঠে ডাক্তার মুক্তার হোসেনের একটি পুকুরে সংস্কার করতে গিয়ে অতিপ্রাচীনকালের পাথরের একটি মূর্তি পাওয়া যায়।
পুকুরের মালিক হোমিও চিকিৎসক মুক্তার হোসেন জানান, উপজেলার মানিকহার মৌজার চামটিয়া মাঠে ১৮৩ নং দাগে ২.৫৬ একর জমিতে পুকুরের অবস্থান। সিএস, এসএ, আরএস খতিয়ানে এটি পুকুর হিসেবে রয়েছে। প্রশাসনের অনুমতিক্রমে দুই সপ্তাহ আগে পুকুরটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে খনন কাজ শেষ করে পুকুরের তলার মাটি সমান করার কাজ চলছিল। মঙ্গলবার সকালে পুকুরের উত্তর-পূর্ব কোণে তলার একটি ঢিবি সমান করার সময় শ্রমিকদের কোদালে শক্ত কোন কিছু বাধে। শ্রমিকরা এ সময় মূর্তিটি উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে মূর্তি উদ্ধারের খবরে উৎসুক জনতা ও পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সেখানে ঘটনাস্থলে পৌছেন।
লালপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম মেজবাউল হক জানান, মূর্তিটির ওজন প্রায় ১৪৫ কেজি, উচ্চতা ৩ ফুট ও চওড়া দেড় ফুট।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলুর রহমান জানান, মূর্তিটি পুলিশের হেফাজতে নাটোর ট্রেজারিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লালপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধারকৃত মূর্তিটি পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নাটোর জেলা প্রশাসন ট্রেজারিতে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী কোন সংগ্রহশালা বা জাদুঘরে পাঠানো হবে।
রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের ডেপুটি চীফ কনজার্ভেশন কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুস জানান, এটি ধূষর বালুকা প্রস্তর মূর্তি। ধারণা করা হচ্ছে, মূর্তিটি গুপ্ত আমলে অর্থাৎ পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শতকে নির্মিত হয়েছে। যার ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম। অমূল্য এই সম্পদের মূল্য আর্থিকভাবে নির্ধারণ সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, নিশ্চিত ধারণা করা হচ্ছে এটি গঙ্গা মূর্তি। তিনি মূর্তিটি বরেন্দ্র গবেষণা যাদুঘরে হস্তান্তরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।